অনলাইনে আয়

ব্লগিং করে কিভাবে টাকা আয় করা যায়? জেনে নিন

আপনি কি একজন সফল ব্লগার হতে চান? ঘরে বসেই লক্ষ লক্ষ টাকা ব্লগিং করে আয় করতে চান? তবে আজকের এই আর্টিকেলটি আপনার জন্যই লিখা!

ব্লগিং এর আদ্যোপান্ত

 

ব্লগিং করে টাকা উপার্জনের ব্যপারটা এখন ওপেন সিক্রেট! আমরা সবাই-ই কমবেশি ব্লগিং এর ব্যপারে শুনেছি। বর্তমানে ইন্টারনেটকে কাজে লাগিয়ে মানুষ ঘরে বসেই ব্লগিং করে টাকা আয় করছে! তাই দিনদিন নতুন প্রজন্মের কাছে তুমুল জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ব্লগিং! অসংখ্য তরুন-তরুনীর স্বপ্ন এখন ব্লগার হবার এবং ব্লগিং করে আয় করার।

 

কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো পর্যাপ্ত গাইডলাইন এবং দিকনির্দেশনার অভাবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে আমাদের ব্লগার হবার স্বপ্ন অধরাই থেকে যাচ্ছে। হয়তো দেখা যায় কোনোভাবে ব্লগিং শুরু করতে পারলেও মাঝপথেই থেমে যেতে হচ্ছে অনেককে!

 

কোনো একটি কাজে নামার আগে সেই কাজটি সম্পর্কে খুটিনাটি জানাটা খুবই জরুরি। নাহলে আপনি অন্যদের চেয়ে পিছিয়ে পড়বেন। আর সেটা যদি হয় ব্লগিং এর মতো প্রতিযোগিতাপূর্ন সেক্টর, তাহলেতো অবশ্যই আপনাকে আরোবেশি সতর্কতার সাথে আগাতে হবে।

 

বর্তমানে অন্যান্য সব অনলাইন সেক্টরের মতো ব্লগিং করতেও আপনাকে বেশ লড়াইয়ের সম্মুখীন হবে আপনার কম্পিটিটরদের সাথে। সেক্ষেত্রে  নিজের কাজটা সম্পর্কে পর্যাপ্ত জ্ঞান এবং দক্ষতা ছাড়া অন্যদের সাথে পাল্লা দেয়াটা মোটেই বুদ্ধিমানের কাজ হবেনা।

 

তাই শুধু আপনাদের জন্য ব্লগিং এর স্টেপ-বাই-স্টেপ জার্নি এবং এর খুটিনাটি সব বিষয় নিয়ে আমরা আমাদের আজকের আর্টিকেলটি সাজিয়েছি। আশা করছি আমাদের আজকের আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়লে ব্লগিং সম্পর্কে আপনার একটি স্বচ্ছ ধারনা তৈরি হবে।

 

এছাড়াও কিভাবে ব্লগিং শুরু করবেন, ব্লগিং এ কিভাবে নিজের অবস্থান তৈরি করবেন এবং সর্বোপরি ব্লগিং করে কিভাবে আয় করবেন সে ব্যপারে বিস্তারিত জানতে পারবেন। তবুও যদি মনে করে থাকেন ব্লগিং নিয়ে আপনার আরো কিছু জানার আছে, তাহলে আমাদেরকে কমেন্ট করে জানাবেন। আশা করি আপনার উত্তরটি পেয়ে যাবেন আমাদের কাছ থেকে। চলুন শুরু করা যাক।

 

ব্লগিং করে কিভাবে আয় করা যায়?

 

ব্লগিং করে টাকা রোজগার করাটা কি সত্যিই সম্ভব?   হ্যাঁ,  অবশ্যই সম্ভব। ব্লগিং করে টাকা উপার্জনের ব্যপারটা এখন আর কোনো জল্পনা কল্পনা নয়। বরং লক্ষ লক্ষ মানুষ ব্লগিং করে মাসে ৫০হাজার থেকে ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয় করতে পারছেন এখন ঘরে বসেই।

 

আপনার যদি ব্লগিং, SEO এবং ইন্টারনেট সম্পর্কে বেসিক ধারনা থাকে তাহলে আপনিও পারেন ব্লগিং এর মাধ্যমে অন্যদের মতো উপার্জন করতে।

 

তবে শুরু করার আগে একটি বিষয় ক্লিয়ার করতে চাই। ব্লগিং বলুন অথবা অন্য যেকোনো অনলাইন স্কিলের কথা বলুন! কোনোটাই সোজা না, আবার কঠিনও না!

 

এখানে যেটা প্রয়োজন সেটা হচ্ছে কৌশলগত পরিশ্রম এবং অধ্যবসায়। আপনাকে পরিশ্রম করতে হবে এবং লেগে থাকতে হবে এটাই হচ্ছে মুল কথা। তবে এটাও জেনে রাখুন, ব্লগিং হচ্ছে এই গ্রহের সবচে মোটা উপার্জনের পেশাগুলোর একটি। আপনার ডেডিকেশন থাকলে ব্লগিং আপনাকে নিরাশ করবেনা।

 

একজন সফল ব্লগার হতে পারলে শুধু টাকাই নয়, এরসাথে আরো অনেক সুবিধা আপনি উপভোগ করতে পারবেন। সবচে গুরুত্বপূর্ণ যেই ব্যপারটি সেটি হচ্ছে আপনাকে অন্যকারো উপর ডিপেন্ড করতে হবেনা কিংবা অন্যকারো মুখাপেক্ষী হতে হবেনা । নিজের ট্যলেন্ট এবং প্রতিভাকে কাজে লাগিয়ে আপনি নিজেই নিজের বস হিসেবে উপার্জন করতে পারবেন ঘরে বসেই! যতক্ষন ইচ্ছা ততক্ষন কাজ করতে পারবেন! কোনো ধরবাধা নেই! পুরোটাই আপনার উপর।

 

 

ব্লগিং করে কত টাকা আয় করা যায়?

 

 

এটা পুরপুরিই নির্ভর করছে আপনার উপর। আপনি কতটা সময় আর শ্রম দিচ্ছেন তার উপর। কৌশলগত পরিশ্রম এবং লেগে থাকাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ এখানে। দেখা যায় অনেক ব্লগার কিছুসময় বাদে নিজেদের আগ্রহ হারিয়ে ফেলে এবং হাল ছেড়ে দেয়। এটা করা যাবেনা।

 

মাসিক কি পরিমান ট্রাফিক আপনি পাচ্ছেন, কিভাবে পেইজ মনেটাইজ করছেন, কতটা সময় দিচ্ছেন এইসব ব্যপারগুলো আপনার উপার্জনের সাথে জড়িত। সাক্সেসফুল ব্লগাররা মাসে লাখ টাকার উপরেও আয় করে থাকেন! আবার একইসাথে সেসময় তাদের ওয়েবসাইটের ভ্যলু কয়েক কোটি টাকা হয়ে থাকে

সুতরাং শ্রম দিন,  পয়সা আসবেই!

 

ব্লগিং করে টাকা রোজগার শুরু করতে কতটা সময় লাগতে পারে?

 

ব্লগিং বলুন অথবা অনলাইনে অন্যযেকোনো স্কিলের কথাই বলুন, আপনাকে যথেষ্ট সময় এবং শ্রম দিতে হবে এখানে। আপনাদের ব্লগের আর্টিকেল যদি মানসম্মত হয় তাহলে আশা করা যায় আপনি দ্রুতই সাড়া পাবেন। অনেকেই ব্লগিং শুরু করার অল্পসময়ের মধ্যেই আয় শুরু করতে পারে, আবার অনেকেরই আয় শুরু করতে স্ট্রাগল করতে হয়৷

 

কিন্ত যারা পরিকল্পনামাফিক ধারাবাহিকভাবে পরিশ্রম করে এবং লেগে থাকতে পারে, তারা খুব দ্রুত এই সেক্টর থেকে আয় করতে পারে এবং ব্লগিং এ একটা সময় বেশ ভালো অবস্থান তৈরি করতে পারে।

 

কিভাবে ব্লগিং শুরু করবো?

 

সঠিক প্লাটফর্ম ব্যবহার করে নিজের একটি ওয়ার্ডপ্রেস ব্লগ শুরু করা অনেকটাই সহজ।

 

বর্তমানে দু ধরনের ওয়ার্ডপ্রেস আছে। এরমধ্যে একটি www.wordpress.com এবং অন্যটি www.wordpress.org

 

এইদুইটির মধ্যে আমরা www.wordpress.org কে রিকমেন্ড করবো। কারন এরমাধ্যমে আপনি লিমিট ছাড়া আয় করতে পারবেন।

 

ব্লগিং শুরু করার জন্য আপনার একটি ডোমেইন নেইম এবং একট ওয়েব হোস্টিং একাউন্ট প্রয়োজন হবে। সাধারনত একটি ডোমেইন প্রতিবছরে মোটামুটি ১৫ ডলার এবং একটি ওয়েব হোস্টিং প্রতিমাসে ৮ থেকে ১০ ডলার চার্জ করে থাকে।

 

তবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এসব ডোমেইন নেইম এবং হোস্টিং খুব চিপ প্রাইসে দিয়ে থাকে। যেমন www.bluehost.com এর মাধ্যমে আপনি মাসিক মাত্র ৩ ডলার দিয়েই স্টার্ট করতে পারবেন। এটি পৃথিবীর জায়ান্ট হোস্টিং কোম্পানিগুলোর একটি। এছাড়াও আপনারা নিজেরা ঘাটাঘাটি করেও চিপ প্রাইসের অনেক হোস্টিং সাইট পেয়ে যেতে পারেন।

 

হোস্টিং ক্রয় করার পর আপনি সেখানে ওয়ার্ডপ্রেস ইন্সটল করে খুব সহজেই নিজের ব্লগিং ওয়েবসাইটটিকে নিজের মতো করে সাজিয়ে নিতে পারবেন।

 

মনে রাখবেন কঠোর পরিশ্রম এবং অধ্যবসায়ের মাধ্যমে চাইলে আপনিও পারবেন অন্যদের মতো ব্লগিং করে আয় করতে।

 

লক্ষ্য স্থির রাখুন

 

আপনার প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে ব্লগিং করে অর্থ উপার্জন করা এটা সবসময় মাথায় রাখুন।

 

বিগিনাররা একটা ব্যপারে ভুল করে। সেটা হচ্ছে তারা ডিজাইনিং এর দিকটাকে খুব বেশি প্রাধান্য দিতে গিয়ে অনেকটা সময়ের অপচয় করে। আমি বলছিনা ডিজাইনিং গুরুত্বপূর্ণ না। আমি বোঝাতে চাচ্ছি, আপনি যখন বিগিনার লেভেলে পর্যাপ্ত পরিমানে ট্রাফিক পেতে হিমশিম খাচ্ছেন ঠিক সে সময় আপনার যেটা প্রয়োজন সেটা হচ্ছে যতবেশি পারা যায়  মানসম্মত কন্টেন্ট তৈরি করা।

 

আপনার অডিয়েন্সের কাছে ওয়েবসাইটের ডিজাইনের চেয়েও আপনার কন্টেন্ট বেশি গুরুত্বপূর্ণ।  এমনকি গুগল নিজেও আপনার ওয়েবসাইটের ডিজাইনিং দেখবেনা, গুগল কেবল আপনার কন্টেন্ট দেখে র‍্যংকিং করবে। তাই কিওয়ার্ড এবং এস ই ও পার্টে গুরুত্ব দিলে সেটা বরং বেশি লাভবান হবে আপনার জন্য।

 

মোদ্দাকথা বিগিনার হিসেবে সাইটে পর্যাপ্ত পরিমানে ট্রাফিক আনাটা অনেক চ্যলেঞ্জিং একটা ব্যপার। আপনাকে সেসব ব্যপারে কাজ করতে হবে। কোনো জিনিস না জানলে গুগল করুন। গুগলে নেই এমন কিছুই বোধহয় এক্সিস্ট করেনা।

 

মানসম্মত কন্টেন্ট পাবলিস করুন

 

ব্লগিং এর সবচে কঠিন এবং চ্যলেঞ্জিং ধাপ হচ্ছে মানসম্মত কন্টেন্ট তৈরি করা।আপনার সাইটে মান্থলি কি পরিমানে ট্রাফিক আপনি আনতে পারবেন সেটার সিংহভাগই নির্ভর করবে আপনার কন্টেন্ট এর উপর।

 

 

◑ কন্টেন্ট বিহীন একটি ব্লগসাইট মানে কিছুই না!

 

◑ মোটামুটি বা এভারেজ মানের কন্টেন্ট থাকার মানে হচ্ছে আপনি অন্যান্য হাজারটা ব্লগের মতোই এভারেজ, যারা অলরেডি এই টাইপের কন্টেন্ট লিখে আপনার আগেই পাবলিশ করে রেখেছে নিজেদের ওয়েবসাইটে!

 

◑ চমৎকার এবং মানসম্মত কন্টেন্ট আছে এমন ব্লগসাইট দিয়েই মুলত আপনি কিছু একটা আশা করতে পারেন। এতো এতো সাইটের মাঝে কেবল আপনার কন্টেন্টই আপনাকে ইউনিক করে তুলবে।

 

বলা হয়ে থাকে ব্লগিং শুরুর প্রথম থেকেই কন্টেন্টের দিকে নজর দেয়া উচিত। আপনার ব্লগিং ক্যরিয়ারের সাক্সেস অনেকটাই নির্ভর করবে কন্টেন্টের উপর।

 

আকর্ষণীয়, গুছানো, তথ্যবহুল এবং প্রাসঙ্গিক কোনো কন্টেন্ট দেরিতে হলেও পাঠকের নজরে আসবে। আপনার ভিজিটররা কি জানতে চাচ্ছেন, আপনার লেখার বিষয়বস্তু কি,সে অনুযায়ী আপনার কন্টেন্ট তথ্যবহুল হচ্ছে কিনা, আপনার অডিয়েন্স এই কন্টেন্টটি পড়ে নিজের প্রশ্নের যথাযথ উত্তর পাবে কিনা এসব ব্যপার মাথায় রেখে কন্টেন্ট লিখুন।

 

 

ভালো মানের ব্লগ-কন্টেন্টের কিছু বৈশিষ্ট্য ঃ

 

◑ ব্লগের কন্টেন্টটি অবশ্যই ইউনিক হতে হবে। কারো থেকে কপি করা যাবেনা, যেটা অলরেডি গুগলে পাবলিশ করা হয়েছে।

 

◑ গুছানো, প্রাসঙ্গিক এবং এতে যথাযথভাবে অডিয়েন্সের প্রশ্নের তথ্যবহুল আলোচনা থাকবে।

 

◑ ভালো মানের কন্টেন্ট খুব সহজেই পড়া যাবে। বানান ভুল করা যাবেনা অবশ্যই।

 

 

তবে এক্সপার্টদের মতামত হচ্ছে আপনি যেসব ব্যপারে ইন্টারেস্টেড সেসব ব্যপারে কন্টেন্ট লিখলে সবচে ভালো। আপনার যদি ওই টপিকে আগ্রহ না থাকে তাহলে খুবেকটা সুবিধা করতে পারবেন না।

 

তাছাড়া আপনি যদি এমন একটি ব্লগিং সাইট বানাতে চান যেখান থেকে আপনি ব্লগিং করে টাকা আয় করতে চান, তাহলে অবশ্যই আপনার সাইটে মানসম্মত প্রচুর কন্টেন্ট থাকতে হবে। অর্থাৎ কোয়ালিটি এবং কোয়ান্টিটি দুটোই গুরুত্বপূর্ণ।

 

প্রচুর ব্লগ আর্টিকেল আপনাকে লিখতে হবে ওই নির্দিষ্ট টপিক রিলেটেড। আপনি যদি ওই টপিকে ইন্টারেস্টেড না হোন তাহলে এটা খুবই চ্যলেঞ্জিং। তাই আগে ভালোকরে চিন্তা করে কোন বিষয়ে ব্লগিং শুরু করতে চান সেটা খুজে বার করুন।

 

 

পর্যাপ্ত পরিমানে ট্রাফিক আছে এমন টপিক নির্বাচন করুন

 

পছন্দের টপিকে ব্লগিং করা উচিত এটা যেমন সত্যি। তেমনি মার্কেট রিসার্স করে দেখা উচিত এই মুহুর্তে ওই টপিকে ব্লগিং করে ঠিক কতটা লাভবান হতে পারবেন। যদি আপনার লেখা ব্লগের ডিমান্ড না থাকে তাহলে কস্ট করে ব্লগিং করে তেমন সুবিধা করতে পারবেন না।

 

পর্যাপ্ত ভিজিটর না থাকলে এডসেন্সের মাধ্যমে যা আয় করতে পারবেন সেটা অতি নগন্য। পুরো ব্যপারটাই আসলে ভিজিটর বা ট্রাফিক নির্ভর।ভিজিটর না থাকলে ব্লগিং করে বিজ্ঞাপন বা এড দেখাবেন কাকে?

 

তাই আগে থেকেই বিচার বিশ্লেষণ করে এমন টপিক নির্বাচন করুন যেই টপিক নিয়ে ব্লগিং করলে পর্যাপ্ত পরিমানে ভিজিটর পাবার সুযোগ রয়েছে।

 

তবে এক্ষেত্রে আপনাকে আরো সাবধানি হতে হবে। পপুলার ব্লগ টপিকগুলো প্রচুর সার্স হয় এটা ঠিক, তবে ওইসব টপিকে র‍্যংকিং এ উঠাটা আপনার জন্য কঠিন হবে। বিশেষ করে আপনার সাইটটি যেহেতু নতুন এবং আপনি যদি একাই কন্টেন্ট লিখে থাকেন।

 

একটা উদাহরণ দেবার চেস্টা করছি। ধরুন আপনি fitness এবং healthy living নিয়ে লিখতে আগ্রহী। এগুলোকে গুগল করলে আপনি হাজারের উপরে ব্লগ পাবেন। প্রতিষ্ঠিত ম্যগাজিন এবং ওয়েবসাইটগুলো এই টপিক নিয়ে অলরেডি লিখে ফেলেছে, এবং র‍্যাংকিং এ আছে অলরেডি।

 

একটি নতুন ওয়েবসাইটের জন্য ওই পুর্বের ভালোমানের ম্যগাজিন এবং ওয়েবসাইটগুলোকে টপকে র‍্যংকিং এ যাওয়াটা প্রায় অসম্ভবের কাছাকাছি।

 

আপনি যেটা করতে পারেন, সেটা হলো, আপনার টপিকটাকে ফিক্সড করে নিন। খুব নির্দিষ্ট একটা টপিক বেছে নিন। যেমন ধরুনঃ “healthy living advice for kids” এই টপিকটাতে কম্পিটিশন তুলনামূলকভাবে কম হবে।

 

এবং এটি যথেষ্ট পপুলার একটা টপিক।বিশেষ করে অবিভাবকরা এসব ব্যপারে খুব আগ্রহী থাকে। এবং আপনি এই টপিকে লিখে সেই রিলেটেড বেবি প্রোডাক্টগুলো এফিলিয়েট মার্কেটিং লিংকের মাধ্যমে বিক্রি করে আয় করতে পারেন। অথবা একটি ই-বুক আকারে লিখে সেখান থেকেও আয় করতে পারেন।

 

মুলত আমি এতক্ষন কিওয়ার্ড রিসার্স নিয়ে কথা বলছিলাম। ব্লগিং করার জন্য এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

কিওয়ার্ড রিসার্স করার জন্য আপনি www.keywordseverywhere.com ব্যবহার করতে পারেন, এটা সম্পুর্ন ফ্রি।

অথবা- ahrefs

 

এই সাইটটি ব্যবহার করে আপনি কোনো টপিক কি পরিমানে সার্স হচ্ছে এবং তার জন্য কম্পিটিশন লেভেল কেমন সেসব খুব সহজেই জানতে পারবেন।

 

অবশ্যই ব্লগিং করার সময় SEO এবং কিওয়ার্ড এর ব্যপারে খেয়াল রাখবেন।

 

অনলাইনে আয়ের আরো কিছু উপায় জানতে পড়ুন-

 

ঘরে বসে অনলাইনে আয় করার সহজ ১০ টি উপায়

 

চলুন এখন আলোচনা করি কিভাবে ব্লগিং করে আপনার সেই কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে আপনি পৌছাতে পারবেন। অর্থাৎ কিভাবে আপনি ব্লগিং করে প্রোপার ওয়েতে অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।

 

১. গুগল এডসেন্সে থেকে আয়

 

ব্লগ থেকে টাকা রোজগার করার জন্য গুগল এডসেন্স সবচেয়ে সুপরিচিত এবং সহজ একটি পদ্ধতি। আপনার ব্লগিং ওয়েবসাইটে যদি ডিসেন্ট এমাউন্ট ট্রাফিক থাকে অর্থাৎ যদি ভালো এমাউন্টের ভিজিটর(ট্রাফিক) আপনার ওয়েবসাইটটি প্রতিমাসে ভিজিট করে,  তাহলে আপনি গুগল এডসেন্সে  আপনার ওয়েবসাইটোটিকে মনেটাইজ করে সেখান থেকে আয় করতে পারবেন।

 

ব্লগিং করে টাকা আয়
ব্লগিং করে কত টাকা আয় করা যায়

 

গুগল এডসেন্স মুলত যেটা করে সেটা হচ্ছে ওরা আপনার ওয়েবসাইটে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের এড প্রদর্শন করে। আমাদের এই লেখাটি পড়ার সময়ও আপনি এড দেখতে পাচ্ছেন নিশ্চয়ই।এটাই গুগল এডসেন্স।

 

যখনই আপনার ওয়েবসাইটের কোনো ভিজিটর গুগলের ওই এডে ক্লিক করবে, তখনই সেখান থেকে আপনি একটা  নির্দিষ্ট এমাউন্টের কমিশন পেয়ে যাবেন। এটাকে বলা হয় CPC

 

CPC কি? CPC (Cost Per Click) মানে হলো যখনই কোনো ভিজিটর আপনার ওয়েবয়ায়াইটে প্রদর্শিত কোনো এডে ক্লিক করবে আপনি সেখান থেকে আয় করতে পারবেন। এক্ষেত্রে আপনি প্রতি ক্লিকে ব্লগিং করে কত টাকা আয় করবেন সেটা গুগল নির্ধারণ করবে।

 

এছাড়াও CPM (Cost Per thousand impression, M দ্বারা রোমান ১০০০ সংখ্যাটিকে নির্দেশ করে) এর মাধ্যমেও আপনাই আয় করতে পারেন। এই পদ্ধতিতে প্রতি হাজার ভিজিটরের ওপর ভিত্তি করে গুগল আপনাকে পে করবে।

 

একজন বিগিনার হিসেবে গুগল এডসেন্সে থেকে আয় করা আপনার জন্য বেশ ভালো একটি অপশন।আপনার ওয়েবসাইটের ভিজিটর বাড়ার সাথে সাথে গুগল এডসেন্সের বিকল্প খুজতে পারেন।

যেমন www.media.net আপনাকে গুগল এডসেন্সের থেকেও অনেক ভালো এমাউন্ট পে করবে। তবে হ্যাঁ, আপনাকে অবশ্যই সে পরিমান ট্রাফিক আনতে হবে আপনার ওয়েবসাইটে।

 

গুগল এডসেন্সের সুবিধাসমুহ

 

গুগল এডসেন্স ব্যবহার করা খুবই সহজ এবং নিরাপদ। আপনার যদি ভালো মানের কন্টেন্ট এবং সেইসাথে পর্যাপ্ত ভিজিটর থাকে তাহলে গুগল এডসেন্স দিয়ে শুরু করাটাই বেস্ট অপশন।

 

ভিজিটররা যখন কোনো এড ক্লিক করবে তখন আপনি সেই আয়ের ৬৮% পেয়ে যাবেন, এবং গুগল আপনাকে সার্ভিস দেয়ার জন্য বাকি ৩২% পাবে।

 

গুগল এডসেন্সের মাধ্যমে এড দেখানোর সময় এডটিকে আপনারা পেইজের কোথায় দেখাতে চাচ্ছেন, কতক্ষন দেখাতে চাচ্ছেন এবং কোনধরনের এডগুলো দেখাতে চাচ্ছেন সেসবকিছু নিয়ন্ত্রণ করতে পারেবন। অর্থাৎ আপনার কাছেই প্রায় পুরো নিয়ন্ত্রণ থাকছে ! তাই গুগল এডসেন্স এতো তুমুল জনপ্রিয়।

 

তবে অবশ্যই এটা মাথায় রাখতে হবে গুগল এডসেন্সের মাধ্যমে টাকা আয় করার জন্য আপনার ওয়েবসাইটের ট্রাফিকই আপনার সবচে বড় শক্তি। যতবেশি ট্রাফিক আপনার ওয়েবসাইটে ভিজিট করবে, ততবেশি এড ভিউ হবে , এবং আপনিও সেই সমানুপাতে  আয় করতে পারবেন।

 

পর্যাপ্ত ভিজিটর পেতে  ওয়েবসাইটে পর্যাপ্ত পরিমানে কন্টেন্ট দিন, এবং অবশ্যই কন্টেন্টের কোয়ালিটি, SEO এর দিকে নজর দিন।

 

 ২. এফিলিয়েট মার্কেটিং থেকে আয়

 

ব্লগিং এর মাধ্যমে টাকা রোজগার করার আরেকটি অনন্য উপায় হচ্ছে অন্যলোকজনদের প্রোডাক্ট আপনার ওয়েবসাইটের মাধ্যমে সেল করা অর্থাৎ এফিলিয়েট মার্কেটিং থেকে আয় । সেটা ফিজিকাল প্রোডাক্ট অথবা ডিজিটাল প্রোডাক্ট যেকোনো ধরনের হতে পারে। এটাকে এফিলিয়েট মার্কেটিং বলা হয়।

 

image

 

 

এফিলিয়েট মার্কেটিং সম্পর্কে আপনাদেরকে সুস্পষ্ট ধারনা দেয়ার জন্য সেটা নিয়ে আলোচনা করার চেস্টা করছি।

 

প্রথমেই আপনাকে চিন্তা করতে হবে আপনি কোন ধরনের প্রোডাক্ট নিয়ে কাজ করতে চান। মার্কেটপ্লেসগুলোতে অনেকধরনের প্রোডাক্ট আছে, হাজারেরও বেশি!

 

আপনাকে  কেবল সেইসব প্রোডাক্ট সিলেক্ট করা উচিত যেগুলো সম্পর্কে আপনার বেশ ভালো একটি ধারনা রয়েছে।

 

কিংবা আপনার ওয়েবসাইটটিতে যেই টপিক নিয়ে লেখালেখি করেন, এফিলিয়েট মার্কেটিং এর জন্য সেই রিলেটেড প্রোডাক্ট সিলেক্ট করাই উত্তম।

 

ধরা যাক আপনি একজন ট্রাভেল ব্লগার। তাহলে সেই রিলেটেড প্রোডাক্টগুলো যেমন তাবু, ব্যকপাক, শর্টস, হাইকিং করার কেডস এধরনের প্রোডাক্ট গুলো প্রোমোট করতে পারেন।

 

কিভাবে এফিলিয়েট মার্কেটিং করবেন?

 

◑ প্রথমত প্রোডাক্ট চয়েজ করুন। চেস্টা করবেন আপনার ওয়েবসাইট বা লেখালেখির সাথে রিলেটেড এমন কোনো প্রোডাক্ট চুজ করতে। এতে আপনার ওয়েবসাইটের ভিজিটরদের কাছে আপনার প্রাসঙ্গিকতা বজায় থাকবে। ভিজিটররাই আপনার মুল শক্তি এটা মাথায় রাখতে হবে।

 

◑ তাদের এফিলিয়েট মার্কেটিং প্রোগ্রামে এপ্লাই করুন, এক্ষেত্রে তারা আপনাকে একটি ইউনিক লিংক প্রোভাইড করবে।যার মাধ্যমে আপনি এফিলিয়েট মার্কেটিং করতে পারবেন।

 

◑ আপনাকে যেই লিংকটা দেয়া হয়েছে সেটি আপনার ওয়েবসাইটে/ ব্লগে এড করুন।

 

◑ যখনই আপনার ওই লিংক ব্যবহার করে কোনো ভিজিটর কোনো প্রোডাক্ট ক্রয় করবে সেখান থেকে আপনি নির্দিষ্ট একটি এমাউন্ট কমিশন পাবেন।

 

সবাই নিজেদের প্রোডাক্ট সেল করতে চায়। তাই বর্তমানে আপনি অসংখ্য প্রোডাক্টের জন্য এফিলিয়েট প্রোগ্রামে জয়েন করে আয় করতে পারবেন। প্রায় প্রতিটি ইন্ডাস্ট্রিতেই এখন এফিলিয়েট প্রোগ্রাম চালু আছে।

 

কিছু জায়ান্ট সাইট আছে যারা হাজারেরও বেশি প্রোডাক্ট নিয়ে এফিলিয়েট মার্কেটিং প্রোগ্রাম অফার করে থাকে। যেমনঃ

 

www.amazon.com

www.commissionjunction.com

www.shareasale.com

 

প্রোডাক্ট সিলেক্ট করার পর সেগুলোকে প্রোমোট করার জন্য আপনি ওয়ার্ডপ্রেস প্লাগিন ব্যবহার করে ব্যপারটাকে আরো সহজভাবে হ্যন্ডেল করতে পারবেন। যেমনঃ

 

www.prettylinks.com

 

এর মাধ্যমে আপনি খুব দ্রুত আপনার ব্লগপোস্টে এফিলিয়েট লিংক এড করতে পারবেন, এবং প্রতিটা এফিলিয়েট লিংকে আপনি ওভার-অল কেমন সাড়া পাচ্ছেন সেটাও দেখতে পারবেন।

 

এফিলিয়েট মার্কেটিং করে অর্থ উপার্জন করাটা তুলনামূলক সহজ। কারন আপনি Amazon, Walmart, Bestbuy এর মতো ওয়েবসাইট থেকে বিশাল পরিমানের প্রোডাক্ট নিয়ে কাজ করার সুযোগ পাচ্ছেন। মার্কেট রিসার্স করে যেসব প্রোডাক্ট হাই ডিমান্ডে আছে সেগুলো নিয়ে কাজ করলে আশা করা যায় এফিলিয়েট মার্কেটিং থেকে আয় করতে পারবেন এবং দিনশেষে আপনি বেশ ভালো অংকের কমিশন নিজের পকেটে রাখতে পারবেন।

 

বিদেশে স্কলারশিপ পাওয়ার সহজ উপায়

 

তবে হ্যাঁ, শুধুমাত্র কমিশনের জন্য আজেবাজে প্রোডাক্ট সাজেস্ট করবেন না আপনার ভিজিটরদেরকে। কারন এতেকরে আপনার সাইটের ভিজিটররা আপনার ওপর আস্থা হারিয়ে ফেলবে।

 

কেবলমাত্র সেসব প্রোডাক্ট নিয়ে কাজ করুন যেসব প্রোডাক্ট  নিয়ে আপনি কনফিডেন্ট। কোনো প্রোডাক্ট নিয়ে কাজ করার আগে সেসব প্রোডাক্টের রিভিউ দেখুন, ইউজাররা কেমন রিভিউ দিচ্ছেন। মার্কেটে ডিমান্ড কেমন, আপনার সাইটের সাথে প্রাসঙ্গিক কিনা এসব কিছু মাথায় রাখুন।

 

৩.  ওয়ার্ডপ্রেস এডভার্টাইজিং প্লাগিন ব্যবহার করে সরাসরি এড সেল করে

 

এতক্ষন আমরা বলছিলাম যে গুগল এডসেন্স কতটা জনপ্রিয় এবং কত সহজে আপনি এটিকে কাজে লাগাতে পারেন। তবে এরজন্য ভিজিটরদের এডক্লিকের উপর আপনাকে নির্ভর করতে হবে।

 

কিন্ত এটা ছাড়াও আরোকিছু পদ্ধতি আছে যেটাকে আপনি কাজে লাগাতে পারেন। যেমন ধরুন আপনি আপনার ওয়েবসাইটের নির্দিষ্ট কিছু জায়গা বিজ্ঞাপন প্রদর্শনের জন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রি করতে পারেন।

 

এই প্রক্রিয়ার লাভ হচ্ছে, আপনাকে গুগল এডসেন্সের মতো কোনো মধ্যস্ততাকারী মিডিয়ার হেল্প নিতে হবেনা। গুগল এডসেন্সের মাধ্যমে এড দেখালে আপনার উপার্জিত আয়ের একটা নির্দিষ্ট এমাউন্টের অর্থ গুগল এডসেন্স নিয়ে যেতো, যেটা প্রায় ৩২%।

 

কিন্ত আপনি নিজে মধ্যস্ততা করে কোনো প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তি করে আপনার ওয়েবসাইটের নির্দিষ্ট কিছু জায়গা তাদেরকে বরাদ্দ করে দিলে, তারা আপনার ওয়েবসাইটের সেই জায়গাগুলোতে নিজেদের বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করবে, এবং আপনাকে তার বিনিময়ে কমিশন প্রদান করবে।

 

এতে করে আপনার উপার্জনে অন্য কেউ ভাগ বসাতে পারবেনা। যতটাকা বিজ্ঞাপন দেখিয়ে আয় করবেন, তার পুরোটাই আপনার থাকবে।

 

এর আগে আমরা আপনাকে CPC এবং CPM সম্পর্কে বলেছিলাম। যেখানে প্রতি হাজার ভিউ এবং এডক্লিকের উপর ডিপেন্ড করে পে করা হয়। এভাবে হিসেব রাখাটা একটু ঝামেলা। এবং মাস শেষে আপনার কত আয় হবে সেটা সম্পর্কে আপনি নিশ্চিত থাকতে পারবেন না।

 

অন্যদিকে আপনি নিজের ওয়েবসাইটের জন্য কোনো প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তিবদ্ধ হলে তারা আপনাকে মাসে একটি নির্দিষ্ট পরিমানে অর্থ প্রদান করবেন। এতে আপনি মোটামুটি নিশ্চিত থাকতে পারবেন আপনার আয় সম্পর্কে।

 

তবে, গুগল এডসেন্স ব্যবহার করার চেয়ে এই প্রক্রিয়ায় আগানোটা একটু ঝামেলা মনে হতে পারে কারোকাছে। গুগল এডসেন্স নিজের ওয়েবসাইটে ব্যবহার করতে আপনাকে হয়তো কয়েকলাইনের কোড ব্যবহার করা লাগতে পারে।

 

অন্যদিকে একটু আগে আমি যে প্রক্রিয়ার কথা বলেছি সেখানে আপনাকে কোনো একটি প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তিবদ্ধ হতে হবে, প্রাইসিং ঠিক করতে হবে, এবং প্রোপার ওয়েতে সেটার মেনেজমেন্ট করতে হবে। যেহেতু এখানে কোনো থার্ড পার্টি নেই, তাই আপনাকে নিজেই দায়িত্বগুলো পালন করতে হবে।

 

ওয়ার্ডপ্রেস এড মেনেজমেন্ট প্লাগিন ব্যবহার করে আপনি এই প্রক্রিয়াটিকে আরো সহজ করে তুলতে পারেন। www.AdSanity.com ব্যবহার করে যেকোনোধরনের এড খুব সহজেই হ্যন্ডেল করতে পারবেন।

 

৪.  স্পনসরদের ব্লগ পোস্টের মাধ্যমে

 

যদিও এড দেখিয়ে আয় করাটা অনেক প্রচলিত একটি পদ্ধতি। তবুও অনেক ব্লগাররা এটিকে তেমন একটা পছন্দ করেন না।

 

কারন এড দেখানোর কারনে আপনার ব্লগ তার সৌন্দর্য হারায়। আপনার ভিজিটররা যখন ভিজিট করবে আপনার সাইটে তখন এডের কারনে তাদের কিছুটা হলেও অস্বস্তি হয়! এটা আপনার বেলাতেও সত্য।

 

আবার অনেকেতো এড ব্লক করে রাখে যাতে করে অবাঞ্চিত এড দেখতে না হয়। আধুনিক ব্রাউজারগুলো এসব সুবিধা দিয়ে থাকে।

এতে করে আপনার উপার্জনের রাস্তাটা সংকুচিত হয়ে যায়।এবং আপনার ইনকামে প্রভাব ফেলে।

এর থেকে উত্তরনের জন্য আপনি স্পন্সরশিপ এড প্রদর্শন করতে পারেন। টিভিতে খেলা দেখা বা অন্যান্য অনুষ্ঠান দেখার সময় আমরা যেমন বিজ্ঞাপন দেখি, স্পনসরশিপ এডও অনেকটা সেরকমভাবে কাজ করে।

 

গুগল এডসেন্সের কারনে আপনার পেইজের ইউজার এক্সপেরিয়েন্স নস্ট হয় কিছুটা। ঘনঘন এড দেখানোর ফলে ভিজিটররা মাঝেমধ্যে বিরক্তও হয়।

 

স্পন্সর পোস্টের মাধ্যমে এড দেখালে সে তুলনায় আপনার ভিজিটররা খুব সুন্দরভাবে আপনার ওয়েবসাইট ভিজিট করতে পারবে। আর ভিজিটরদেরকে ভালো একটা এক্সপেরিয়েন্স দেয়াটাও খুব বিশাল ব্যপার। জায়ান্ট কোম্পানিগুলো এসব ব্যপারে খুব মনোযোগী।

 

যেমন ফেইসবুকের মতো জায়ান্ট টেক কোম্পানির কথা চিন্তা করুন। আপনি ফেইসবুকে কোনো স্ট্যটাস পড়ার সময় কোনো এড দেখতে পাবেন না। আপনি যাতে স্বাচ্ছন্দে ফেইসবুকে সময় কাটাতে পারেন, সে কথা মাথায় রেখেই মার্ক জাকারবার্গ এটা করেছে। দর্শকদের সেটিসফ্যকশনটাই তারকাছে মুখ্য। যদিও ফেইসবুকে ভিডিও দেখতে গেলে আপনাকে এড দেখতে হবে।

 

৫.  ওয়েবসাইট বিক্রি করে আয়

 

আপনি যদি জানেন কিভাবে একটি ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট তৈরি করতে হয়, তাহলে আপনি এমনিতেই অন্য দশজন ব্যক্তি থেকে এগিয়ে আছেন। আর সেই ওয়েবসাইটে যদি ভালো মানের কিছু কন্টেন্ট থাকে, তাহলে আজ নাহোক কাল সেখানে ভিজিটর আসবেই।

 

কিছু উদ্যোক্তা আছেন যারা এমনধরনের ওয়েবসাইট কিনতে বেশ আগ্রহী, যেসব ওয়েবসাইট অলরেডি ইন্টার্নেটে নিজেদের অবস্থান তৈরি করে ফেলেছেন। আপনার ওয়েবসাইটটিতে ট্রাফিক যতই কম হোক না কেন, উপার্জন যতই কম হোক না কেন! আপনি বেশ ভালো দামে সেটি বিক্রি করে ফেলতে পারবেন। ক্রেতার অভাব পড়বেনা।

 

এমন অনেক সাইট আছে যেখানে আপনি আপনার ওয়েবসাইট বিক্রি করে আয় করতে পারেন বেশ ভালো পরিমানে অর্থ। যেমন ধরুনঃ

www.Flippa.com

 

৬.  প্রশ্নোত্তর কমিউনিটি তৈরি করে

 

অনলাইনে কিছু প্রশ্নোত্তর কমিউনিটি আছে। যেখানে ইউজাররা একে অপরের প্রশ্নের উত্তর দিয়ে নিজেরা নিজেদেরকে সাহায্য করে।

 

আপনি অনেক অজানা সব প্রশ্নের অনেক সহজ সমাধান পেয়ে যাবেন সেখানে। আপনার যদি কিছু জানতে ইচ্ছা করে তাহলে আপনিও সেখানে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি সেখানে লিখতে পারেন ব্লগিং করে কিভাবে আয় করা যায়? ওদের ইউজারদের মধ্য থেকে কেউনা কেউ ঠিকই আপনার প্রশ্নের চমৎকার এবং ব্যখ্যামুলক উত্তর দিয়ে দিবে আপনাকে।

যেমন ধরুনঃ

www.Quora.com

www.StackExchange.com

 

এদের ফলোয়ার হিউজ!এবং এরা খুবই এনগেজড থাকে একে অপরের সাথে।

 

তবে সেক্ষেত্রে আপনাকে এরকম একটি কমিউনিটি বিল্ডাপ করার জন্য সময় ব্যয় করতে হবে। পর্যাপ্ত পরিমানে ফলোয়ার পেয়ে গেলে কন্টেন্ট নিয়ে আর ভাবতে হবেনা। ইউজাররাই নিজেরা নিজেদের কন্টেন্ট একে অপরের জন্য লিখে দিবে। মজার না?

 

৭.  ওয়ার্ডপ্রেস জববোর্ডের মাধ্যমে

 

আপনার ব্লগ সাইটে জববোর্ড এড করতে পারেন। যেসব কোম্পানি কর্মীনিয়োগ দিতে চায় তারা চাইলে আপনার ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বিজ্ঞাপন দিতে পারবে । এবং এর বিনিময়ে আপনাকে তারা কমিশন দিবে।

 

একটি নির্দিষ্ট টপিকের ওপর জববোর্ড তৈরি করলে সেটা সাক্সেসফুল হবার সম্ভাবনাই বেশি।  এতে করে একটা নির্দিষ্ট ইন্ডাস্ট্রিতে আপনার অথোরিটি বেড়ে যাবে দিনদিন।

 

প্রতিষ্ঠিত ওয়েবসাইটগুলোতে এই পদ্ধতি খুব ভালো কাজ করে।

যেমন ধরুনঃ www.ProBlogger.com প্রফেশনাল ব্লগারদের জববোর্ডের জন্য বেশ জনপ্রিয়! ম্যক্সিমাম ব্লগাররা জব খোজার জন্য এখানকার জববোর্ড ইউজ করে থাকে। এতে তারা ভালো অংকের কমিশন লাভ করে থাকে।

 

৮.  ই-বুক বিক্রি করে

 

বর্তমানে ডিজিটাল প্রোডাক্টগুলোর মধ্যে ইবুকের জনপ্রিয়তা তুঙ্গে! ইবুক লেখা তুলনামুলক সহজ। আপনি যদি বেশকিছুদিন যাবৎ ব্লগিং পেশার সাথে যুক্ত থাকেন, তাহলে নিজের পুরনো ব্লগগুলোথেকে ভালো মানের কিছু কন্টেন্ট সিলেক্ট করুন। সেগুলোকে একসাথে জুড়ে দিয়ে ইবুকের একটি অংশ ফিলাপ করে ফেলুন! বাকিটা ইউনিকভাবে লিখুন। এভাবে আপনি আপনার নিজের একটি ই-বুক লিখে ফেলতে পারেন।

 

লিখা শেষ হলে সেগুলোকে ডিজাইন করার জন্য কিছু টুল ইউজ করতে পারেন। যেমনঃ

 

www.Canva.com

 

এরপর নিজের বইটির একটি পিডিএফ ফর্ম্যট তৈরি করে ফেলুন।

 

ওয়ার্ডপ্রেস প্লাগিন ব্যবহার করে ডিজিটাল প্রোডাক্ট সেল করা অনেকটাই সহজ। যেমনঃ www.EasyDigitalDownloads.com ইউজ করে আপনার ডিজিটাল প্রোডাক্ট সেল করার জন্য প্রায় সব ধরনের টুলস আপনি পেয়ে যাবেন।

 

৯. অনলাইন কোর্স বিক্রি করে আয় করুন

 

অনলাইনে টাকা রোজগার করার জন্য অনলাইন কোর্স একটি চমৎকার পদ্ধতি। আপনি যে বিষয়ে দক্ষ, সেবিষয়ে কোর্স করিয়ে বেশ ভালো পরিমানে অর্থ আয় করে নিতে পারেন।

 

ই-বুকের চেয়েও অনলাইন কোর্স সাধারনত বেশ চড়া দামে বিক্রি হয়ে থাকে।

 

প্রথমেই অনলাইন কোর্সের জন্য আপনাকে প্রয়োজনীয় ক্লাস বা লেকচার তৈরি করতে হবে। এবং এরসাথে আপনাকে প্রয়োজনীয় সাপোর্টিং মেটেরিয়ালস যুক্ত করতে হতে পারে। সেটা হতে পারে ডাউনলোড অপশন,  স্লাইড,  চেকলিস্ট,  টেম্পলেট ইত্যাদি।

 

আপনার কোর্স রেডি হয়ে যাবার পর, আপনি Learning Management System(LMS) প্লাগিন ব্যবহার করে খুব সহজেই আপনার কোর্সটিকে স্টুডেন্টদের কাছে ডেলিভারি দিতে পারেন।

 

এক্ষেত্রে আমরা www.MemberPress.com সাজেস্ট করবো।

 

১০. ব্লগিং স্কিল কাজে লাগিয়ে

 

একজন ব্লগার হিসেবে আপনি নিজের ফিল্ডে একজন দক্ষ ফ্রিলান্সার। আপনি নিজের দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে একজন ফ্রিলান্সার হিসেবে আয় করতে পারেন।

 

ফ্রিলান্সিং বর্তমানে অনলাইনে আয় করার একটি জনপ্রিয় পদ্ধতি। কারন এতে তেমনকোনো অর্থ ব্যয় করতে হয়না। আপনি নিজের অডিয়েন্স বা ভিজিটরদেরকে নিজের সার্ভিস অফার করতে পারেন। অথবা বিভিন্ন প্রফেশনাল সাইট যেমনঃ

www.fiver.com

www.upwork.com

 

এসব সাইটের মাধ্যমে প্রফেশনালি ব্লগিং বা কন্টেন্ট রাইটার হিসেবে গিগ খুলে আয় করতে পারেন। একজন ভালোমানের রাইটারদের সবসময়ই ডিমান্ড থাকে মার্কেটপ্লেসে।

 

একজন ভালো ব্লগার ফ্রিলান্সিং করে এসব মার্কেটপ্লেসে থেকে ব্লগিং করে টাকা আয় করে থাকে। আপনিও তাদের মতো নিজের স্কিলটাকে কাজে লাগান।

 

ব্লগিং করে আয় করার জন্য আপনার জন্য কোন পদ্ধতিটি ভালো হবে?

 

এটা পুরোপুরি নির্ভর করবে আপনার আগ্রহের উপর, এবং অবশ্যই আপনার ব্লগিং নিশের উপর।

 

ধরা যাক আপনি ট্রাভেল ব্লগিং বা ফটোগ্রাফি ব্লগ করেন। তাহলে এফিলিয়েট মার্কেটিং,  এডসেন্স এইসব পদ্ধতিতে আপনি  বেশ ভালো ব্লগিং করে টাকা আয় করতে পারবেন।

 

তবে হ্যাঁ,  একটা ব্যপার অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে। সেটা হচ্ছে কোয়ালিটি কন্টেন্ট। আপনার লেখা অবশ্যই মানসম্মত হতে হবে, যেটা আপনার ভিজিটরদের কাজে আসবে। আপনার লেখা যাতে আপনার অডিয়েন্সের উপর পজিটিভলি প্রভাব ফেলে সেটা খেয়াল রাখতে হবে।

 

আর হ্যাঁ, নিজে যেটাকে ভালোবাসেন, সেটা নিয়ে এগিয়ে যান। ভালো কিছু হবেই।

 

শেষকথা

 

ব্লগিং করে টাকা উপার্জন এখন আর কোনো সিক্রেট বা রহস্য নয়। ইন্টার্নেট ইউজ করেন এমন প্রায় অধিকাংশ লোকই জানেন ব্লগিং এর ব্যপারে। এমনকি বর্তমানে হাজারো ব্লগার তাদের নিজেদের ব্লগের মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা আয় করছেন। হয়তো তারা নিজেদের ব্লগ সাইটে এড দেখাচ্ছেন অথবা স্পন্সর পোস্ট দেখাচ্ছেন, নয়তো এফিলিয়েট মার্কেটিং করছেন। আর যারা স্মার্ট তারা এর সবকটিই এপ্লাই করে নিজেদের পকেট ভারি করে নিচ্ছেন।

 

সফল ব্লগারদের মধ্যে কিছু জিনিস কমনঃ

 

◑ তাদের ব্লগে মানসম্মত প্রচুর কন্টেন্ট আছে।

 

◑ তাদের ব্লগের প্রচুর অডিয়েন্স আছে। যারা নিয়মিত তাদের ব্লগ পড়েন।

 

◑ তারা একের অধিক পদ্ধতিতে নিজেদের ব্লগ সাইট থেকে আয় করেন। এফিলিয়েট মার্কেটিং, এডসেন্স সহ সম্ভাব্য সকল উপায়ে তারা নিজেদের ব্লগ সাইট থেকে অর্থ উপার্জন করে থাকে।

 

◑ তারা প্রায় কয়েক বছর ধরে ব্লগিং সেক্টরে আছেন। এবং এই ক্যরিয়ারে প্রতিষ্ঠিত হতে তাদের বেশ কিছু বছর সময় লেগেছে। এবং বর্তমানে তারা অকল্পনীয় পরিমান অর্থ আয় করছে। তাদের ওয়েবসাইটের ভ্যলু কোটি কোটি টাকার উপর! শুধু নিজেদের মেধা আর পরিশ্রমের জোরেই সব সম্ভব।

 

এসব কিছু জেনে যদি আপনি ব্লগিং এ আসতে চান তাহলে আপনাকে স্বাগতম।

প্রত্যেকেই জানে কিভাবে ব্লগিং করে আয় করতে হয়। কিন্ত কি পরিমানে আয় করতে পারেন সেটা নির্ভর করবে আপনি কি পরিমান শ্রম এবং সময় দিচ্ছেন তার উপর।

 

যদি আপনার ডেডিকেশন থাকে ভালো কিছু করার, তাহলে আর দেরি করছেন কেন? নেমে পড়ুন!

 

হ্যপি ব্লগিং!

 

আরও পড়ুন-

সকল চাকরির খবর দেখুন– এখানে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button