লাইফস্টাইলহেলথ

গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা

গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা এবং এই সম্পর্কিত অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য 

গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা, ব্যায়াম এবং বিশ্রামের গুরুত্ব যারা বুঝতে পেরেছে, তারা নিঃসন্দেহে একটি সুস্থ শিশু এবং সুস্থ মায়ের আশা রাখতে পারে। কারণ মায়ের শরীরে একটি শিশু বেড়ে উঠার ক্ষেত্রে এই খাবার-দাবার সম্পর্কিত নিয়মকানুন বেশ গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব রাখে। চলুন তবে এই গুরুত্বকে আরোকিছুটা প্রাধান্য দিতে জেনে নেওয়া যাক গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা এবং খাবার গ্রহণে বিধি-নিষেধসহ সম্পর্কিত অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। 

 

সূচিপত্র:

  • গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা কেমন হবে? 
  • গর্ভাবস্থায় খাবার গ্রহণে বিধি নিষেধগুলি কি কি? 
  • গর্ভবতী মায়ের ৫ টি বিপদ চিহ্নগুলি কি কি? 
  • গর্ভবতী হওয়ার কতদিন পর বমি হয়? 
  • গর্ভাবস্থায় সহবাস সম্পর্কিত তথ্য এবং ঝুঁকিগুলি কি কি? 
  • গর্ভবতী হওয়ার পর কি মাসিক হয়? 

 

 

গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা কেমন হবে?

 

8756
Image by macrovector on Freepik

প্রতিটি মায়েরই উচিত গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা মেনে খাবার গ্রহণ করা। মনে রাখবেন, গর্ভাবস্থায় অনেক শারীরিক পরিবর্তন হয়। যা শিশুর বৃদ্ধিকে নানাভাবে প্রভাবিত করে। এসব পরিবর্তনকে পূর্ণ সাপোর্ট দিতে এবং শারিরীকভাবে নিজেকে সুস্থ রাখতে সঠিক খাদ্য তালিকা মেনে চলা উচিত। এক্ষেত্রে দেহের পুষ্টি নিশ্চিত করার সাথে সাথে শিশুর সুস্থ বিকাশ বজায় রাখার জন্য পর্যাপ্ত পুষ্টি রয়েছে এমন সব খাবার নির্ধারণ করতে হবে। চলুন জেনে নেওয়া যাক একজন গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা কেমন হবে। বা এই তালিকায় ঠিক কোন কোন খাবারকে আবশ্যিকভাবে রাখতে হবে। 

 

মসুর ডাল

গর্ভবতী মায়েদের ক্ষেত্রে বিভিন্ন খাবারের প্রতি মানসিক এলার্জি থাকে। এক্ষেত্রে অনেকেই বিভিন্ন খাবারকে অপছন্দ করা শুরু করে। যাইহোক! এই সময়ে আপনার হয়তো মাংস কিংবা মাংসজাতীয় খাবারও বিরক্ত লাগতে পারে। এমতাবস্থায় মাংসে থাকা পুষ্টির ঘাটতিকে বিদায় জানাতে খাবারের তালিকায় মসুর ডালকে রাখতে পারেন। 

 

মসুর ডাল বি ভিটামিন ফোলেটে সমৃদ্ধ একটি খাবার। যা বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সীমিত বাজেটেই কিনতে পাওয়া যায়। যা পুষ্টি উপাদান হিসাবে আপনার শিশুর মস্তিষ্ক এবং স্নায়ুতন্ত্র গঠনের জন্য অত্যাবশ্যক ভিটামিন হিসাবে কাজ করে। তাছাড়া মায়ের শারিরীক শক্তি অর্জনেও এই মসুর ডালের জুড়ি মেলা ভার৷ এক্ষেত্রে আপনি যদি ১ কাপ মসুর ডালকে ভালোভাবে রান্না করতে পারেন সেক্ষেত্রে ১৭ গ্রাম প্রোটিন এবং ৭ গ্রাম আয়রন পাবেন৷ 

 

বাদাম

মাঝেমধ্যে বসে বসে বোর হওয়ার চাইতে ওই সময়টাতে হালকা-পাতলা খাবার হিসাবে বাদাম খেতে পারেন। একজন গর্ভবতী নারী হিসাবে এই বাদাম আপনার দেহের পুষ্টির দিকটা নিশ্চিত করবে। নিউট্রিশিয়ানদের মতে এই বাদাম প্রোটিন, ফাইবার এবং স্বাস্থ্যকর চর্বিসহ ম্যাগনেসিয়াম, জিঙ্ক, পটাসিয়াম এবং ভিটামিন ই এর মতো গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন এবং খনিজ পদার্থে পূর্ণ একটি খাবার৷ 

 

তাছাড়া বাদাম খেতে গিয়ে আয়োজন করে রান্না করতে হয় না কিংবা প্লেটও সাজাতে হয় না। হাতের মুঠোয় কিছু বাদাম সবসময় রাখলেই হয়ে যায়। তবে যারা সরাসরি বাদাম খেতে পছন্দ করেন না তারা বিভিন্ন রান্না করা খাবারে বাদাম ব্যবহার করতে পারেন। বিশেষ করে গরুর মাংস, মুরগির মাংস ইত্যাদি রান্না করা খাবারে বাদাম পেস্ট ব্যবহার করা হয়ে থাকে। তাছাড়া বিভিন্ন ডেজার্টে আপনি চাইলে আস্ত বাদাম ব্যবহার করতে পারেন। এতে করে আলাদা করে বাদাম খাওয়ার প্রয়োজন পড়বে না। 

 

গাজর

বিটা-ক্যারোটিন সমৃদ্ধ এই খাবারটিকে গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকায় একেবারে না রাখলেই নয়! মনে রাখবেন গাজর যতবেশি উজ্জ্বল কমলা রঙের হবে ততবেশি তা দেহের জন্যে উপকারী খাদ্য হিসাবে বিবেচিত হবে। যারা বিটা ক্যারোটিনের কাজ সম্পর্কে জানেন না তাদের বলে রাখি, এই বিটা ক্যারোটিন মানবদেহে পরবর্তীতে ভিটামিন এ হিসাবে কাজ করে থাকে। 

 

এবার আসি এই গাজরকে কিভাবে গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকায় স্বাস্থ্যসম্মতভাবে যোগ করবেন সে-ব্যাপারে। চাইলে গাজরকে আপনি মিষ্টি আলুর মতো সিদ্ধ করে হালকা চিনি, নারিকেল এবং গুড়া দুধের সাথে ম্যাশ করে নির্দিষ্ট আকার দিয়ে খেতে পারেন। পাশাপাশি গাজরের হালুয়া তৈরি করেও তা ট্রাই করা যায়। সেই সাথে গাজরের জেলি, বিভিন্ন সবজিতে গাজরের ব্যবহার কিংবা ফ্রাইড রাইসে গাজরের ব্যবহার কিন্তু মুখের স্বাদকে বাড়িয়ে দেয় বহুগুণে। 

 

কলা

কলা পটাসিয়াম সমৃদ্ধ, একটি খনিজ সরবরাহকারী খাবার৷ যা গর্ভবতী নারী এবং সাধারণ ব্যাক্তিদের স্বাস্থ্যকর রক্তচাপ বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। আমরা হয়তো সকলেই ইতিমধ্যেই জেনেছি, একজন গর্ভবতী নারীকে সুস্থ থাকতে হলে তার রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখাটা কতটুকু জরুরি! সুতরাং এক্ষেত্রে কলাকে খাবার তালিকায় রাখা মানেই গর্ভবতী নারীর স্বাস্থ্যের সুস্থতা নিশ্চিত করা। 

 

গর্ভাবস্থায় আপনি চাইলে এই কলাকে সকালের নাস্তা হিসাবে খেতে পারেন। কিংবা ডিনার বা লাঞ্চ করার পরেও কোনো ফাঁকে একটি কলা খেয়ে নিতে পারেন। আর যদি বিভিন্ন কলার মাঝে কোন জাতের কলা খাওয়টা বেটার হবে সে-সম্পর্কে সাজেশন চান, সেক্ষেত্রে বলবো দেশী কলা ট্রাই করতে পারেন। কারণ দেশী কলায় অন্যান্য জাতের কলার চাইতে প্রচুর ভিটামিন থাকে। যা একজন গর্ভবতী নারী হিসাবে আপনাকে এবং আপনার অনাগত সন্তানকে সুস্থ থাকতে সাহায্য করবে। 

 

আরো পড়ুন- গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ

 

 

ড্রাই ফ্রুট

গর্ভবতী মায়ের খাবার
গর্ভবতী মায়ের খাবার

Image by gpointstudio on Freepik

আসলে আধুনিক যুগে এসে আমরা বিভিন্ন খাবারের আধুনিক রূপ দেখতে পাই। যেমন পিজ্জা, মোমো..! এক্ষেত্রে ড্রাই ফ্রুটের কথাও উল্লেখ না করলে নয়! পুরোনো হলে নতুনভাবে এই খাবার আবারও ট্রেন্ডি হয়ে উঠেছে। গবেষণা বলছে একজন গর্ভবতী নারীর ক্ষেত্রে এই মিক্স ড্রাই ফ্রুট একসাথে বিভিন্ন পুষ্টির জোগান দিয়ে থাকে। 

 

ফাইবার, আয়রন, ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের মতো পুষ্টির এক গুরুত্বপূর্ণ এবং বিশেষ উৎস হিসাবে কাজ করে এই ড্রাই ফ্রুট। তবে তা মিক্স ড্রাই ফ্রুট হওয়া চাই। তাছাড়া শুকনো ফল তাজা থাকার চেয়ে অনেক বেশি ক্যালোরি উৎপন্ন করার ক্ষমতা রাখে। যখন আপনি অনুভব করতে পারেন যে আপনার রক্তে শর্করা কমে যাচ্ছে, ঠিক তখনই এই মিক্স ড্রাই ফ্রুট ট্রাই করতে পারেন। তাছাড়া দই, বিভিন্ন ডেজার্টসহ অন্যান্য খাবারের সাথে এড করেও এই খাবার গ্রহণ করা যায়। 

 

পানি

গবেষণা কিংবা অন্যান্য সোর্স অনুযায়ী পানি কোনো খাবারের আওতাভুক্ত না হলেও পানিকে আমরা খাবারের অংশ হিসেবেই ধরে থাকি। সুতরাং একজন গর্ভবতী নারী হিসাবে অবশ্যই আপনাকে পানি পান করার নির্দেশনাকেও সমানভাবে গুরুত্ব দিতে হবে। মনে রাখবেন আপনার অনাগত শিশুর কাছে পুষ্টি সরবরাহ করতে এবং তার শরীরে নতুন কোষ তৈরি করতে সাহায্য করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে এই পানি। 

 

তাছাড়া এ-কথা ভুললে চলবে না যে, হাইড্রেটেড থাকা আপনার জন্যও বেশ গুরুত্বপূর্ণ। গর্ভাবস্থায় কোষ্ঠকাঠিন্য বন্ধ করার জন্য সেরা টিপস বা উপায় হিসাবে পর্যাপ্ত পানি পান করার ব্যাপারটি মাথায় রাখতে পারেন। এছাড়াও, ডিহাইড্রেশনের সমস্যা প্রাথমিক প্রসবের ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলতে পারে। সুতরাং গর্ভাবস্থায় দিনে ৮/৯ গ্লাসেরও বেশি পানি পান করা উচিত। 

 

দুধ

গর্ভবতী মায়ের ক্ষেত্রে শিশুর হাড় এবং দাঁতকে মজবুত করতে ক্যালসিয়ামে ভরপুর খাবার প্রয়োজন। এক্ষেত্রে পানীয় হিসাবে দুধের ব্যবস্থা রাখতে পারেন। এছাড়াও দুধ ভিটামিন ডি, আয়োডিন এবং প্রচুর প্রোটিন সরবরাহ করে থাকে। তাছাড়া প্রতি ১ কাপ দুধে তো ৪ গ্রামের মতো ক্যালোরি থাকেই! তবে যারা গর্ভবস্থায়ও ডায়েট মেইনটেইন করেন তাদের প্রতিদিন দুধ পান না করবার অনুরোধ রইলো। 

 

যদিও অনেকেই দুধের প্রতি বড্ড বিরক্তি প্রকাশ করে থাকে। অনেকেই আবার এই পানীয়কে মোটেও পছন্দ করেন না। সেক্ষেত্রে ফ্রুট স্মুদিতে দুধ ব্যবহার করে খেতে পারেন। আম, কলা, স্ট্রবেরি, অ্যাভাকাডো ইত্যাদি ফ্রুটের সাথে দুধ ব্লেন্ড করলেই হয়ে যাবে ফ্রুট স্মুদি। তাছাড়া তাছাড়া ঠান্ডা, ক্রিমি আইস পপ তৈরি করতে পপসিকল মোল্ডে ফল এবং দুধের স্মুদি ঢেলে দিতে পারেন। এই পানীয় আপনাকে শক্তি উৎপন্ন করতে সাহায্য করবে। 

 

মিষ্টি আলু

একজন গর্ভবতী মায়ের উচিত তার খাদ্য তালিকায় মিষ্টি আলু রাখা। কারণ এই মিষ্টি আলু আপনার দিনের হাফ ভিটামিনের অভাব দূর করে দিতে পারবে সহজেই! বিশেষ করে ৩ মাসের গর্ভবতী নারীর ক্ষেত্রে এই মিষ্টি আলু বেশ গুরুত্বপূর্ণ এবং পুষ্টিকর খাবার হিসাবে বিবেচিত হয়ে থাকে। বিশেষ করে যখন আপনার শিশুর কোষগুলি দ্রুত গতিতে বিভক্ত হয়ে বিভিন্ন অঙ্গ এবং শরীরের অংশে পরিণত হতে থাকে, ঠিক তখনই সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন পড়ে এই মিষ্টি আলুর। 

 

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে মিষ্টি আলুকে কিন্তু বেশ কমন খাবারই বলা চলে। সুতরাং প্রায় সকল মৌসুমেই আপনি লিমিটেড বাজেটে কিনে নিতে পারেন এই মিষ্টি আলু। তবে বাংলাদেশ শীতকালে এই বিশেষ ধরণের আলুর চাষ তুলনামূলকভাবে অধিক হারে করা হয়ে থাকে। চাইলে আপনি মিষ্টি আলু সিদ্ধ করে সরাসরি খেতে পারেন। তবে টুকরো টুকরো করে মিষ্টি আলু কেটে তা তেলে ভেজে নিতে পারেন। পাশাপাশি মিষ্টি আলু সিদ্ধ করে তা পেস্ট করে, তার সাথে ময়দা যোগ করে বিশেষ একধরণের পিঠা তৈরি করতে পারেন৷ তা খেতে বেশ সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর! 

 

ডিম

শুরুতেই বলে রাখি এক একটি ডিমে ৬ গ্রামের বেশি প্রোটিন থাকে। যা গর্ভবতী নারীকে শক্তি উৎপন্ন করতে সাহায্য করে৷ তাছাড়া ভিটামিন ডি গর্ভবতী নারীর অনাগত শিশুর মজবুত হাড় এবং দাঁত তৈরিতে সাহায্য করে থাকে। সেই সাথে এই ডিম মায়ের ইমিউন সিস্টেমকে সর্বোচ্চ সচল রাখার চার করে। 

 

সেই সাথে আপনার জেনে রাখা উচিত গর্ভকালীন সময়ে এই ডিম গর্ভবতী নারীর ডায়াবেটিস, প্রিক্ল্যাম্পসিয়া এবং কম ওজনের শিশু জন্মানোর ঝুঁকি কমাতে পারে। সুতরাং খাবারের তালিকায় নিয়মিত হারে কোলিন সমৃদ্ধ, মস্তিষ্ক এবং স্নায়ুতন্ত্রের বিকাশের জন্য এই অপরিহার্য পুষ্টিকর খাবারটিকে রাখতে ভুলবেন না কিন্তু! আর ডিম কিভাবে খাবেন সে-সম্পর্কে তো আর বলার অপেক্ষা রাখে না। চাইলে ভেজে, হাফ বয়েল করে কিংবা ফুল বয়েল করে সালাদের সাথে খেতে পারেন। তাছাড়া ভাতের সাথে কিংবা নাস্তার সাথে অথবা শুধু শুধুই খেতে পারেন এই ডিম। 

 

আম

আম সিজনাল ফ্রুট হলেও বাজেটের পরিমাণ বাড়াতে পারলে তা সবসময়ই পাওয়া যায়। প্রতিটি গর্ভবতী নারীরই উচিত ফলমূলের তালিকায় আম রাখা। তবে যারা ডায়েট কনট্রোল করছেন, তাদের অবশ্যই এই ফলটিকে খাদ্য তালিকা থেকে বাদ দিতে হবে। 

 

তবে যারা গর্ভবতী থাকাকালীন সময়ে আম খেতে পারবেন তারা তাদের শরীরে ভিটামিন এ এবং সি এর মতো গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদানের অভাব সহজেই পূরণ করতে পারবেন। আম সরাসরি খাওয়া ভালো এবং মজার। তবে আপনি চাইলে ফালুদা, কাস্ট্রার্টসহ বিভিন্ন ডেজার্টের সাথে এই আম যোগ করে খেতে পারেন। পাশাপাশি কাঁচা আমকে আচার বানিয়ে খেতে পারলেও মন্দ হয় না। মনে রাখবেন কাঁচা আমের আচার কিন্তু মুখের স্বাদ তৈরিতে এবং বাড়াতে দারুণভাবে কাজ করে। তাছাড়া কাঁচা আম সবজি এবং মাছের সাথে রান্না করেও খাওয়া যায়। 

 

অ্যাভোকাডো

এইতো! কিছুদিন পূর্বেও এই অ্যাভোকাডো ফলের সাথে আমরা পরিচিত না হলেও বর্তমানের ইন্টারনেট যুগের বদৌলতে ভালোভাবেই আমরা ফলটিকে চেনার সুযোগ পেয়েছি। অ্যাভোকাডো ফলকেও একজন গর্ভবস্থায় থাকা নারীর খাবার তালিকায় রাখা উচিত। কারণ এক একটি অ্যাভোকাডো ফলে রয়েছে ভিটামিন B6 সহ গুরুত্বপূর্ণ ফোলেট উপাদান। 

 

অনাগত শিশুর ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যকর টিস্যু এবং মস্তিষ্কের বৃদ্ধিকে নিশ্চিত করে থাকে এই আনকমন ফলটি। তাছাড়া গর্ভকালীন সময়ে যেসব মায়েরা মর্নিং সিকন্যাসে ভোগেন কিংবা নিয়মিত সকালের দিকে যাদের খারাপ লাগে তারা এই ফলটি খেয়ে উপকৃত হতে পারেন। শুধু তাই নয়! এই ফলটি আপনার শরীরকে ফল এবং শাকসবজিতে পাওয়া অসংখ্য ভিটামিনকে দ্রুত শোষণ করতে শতভাগ সাহায্য করে থাকে৷ সেই সাথে অ্যাভোকাডোর উচ্চ চর্বিযুক্ত উপাদান আপনাকে শারীরিকভাবে শক্ত থাকতে সাহায্য করবে৷ 

 

দই

দইয়ে রয়েছে প্রচুর পরিমাণের ক্যালসিয়াম। হাড়কে শক্তিশালী রাখতে এবং গর্ভবতী নারীর স্নায়ু ও পেশীগুলিকে শক্তিশালী রাখতে দই খাওয়াটা বেশ জরুরি। মোট কথা আপনাকে আপনার প্রতিদিনের ক্যালসিয়ামের চাহিদা মেটাতে সাহায্য করতে পারে এই দই বা দইয়ের সাহায্যে তৈরি করা বিভিন্ন খাবার। 

 

বলে রাখা ভালো, প্রোটিন, আয়োডিন এবং ফোলেট দিয়ে পরিপূর্ণ এক কাপ ঘন দই নিয়মিত খাওয়াটা বেশ জরুরি। গর্ভাবস্থায় যারা পেট খারাপের সমস্যায় ভুগে থাকেন তারা নিয়মিত দইকে খাদ্য তালিকায় রাখতে পারেন৷ যারা শুধু দই খেতে পছন্দ করেন না তারা দইয়ের সাথে এক ফোঁটা মধু বা কাটা তাজা ফল মিশিয়ে খেতে পারেন। আশা করি ভালো লাগবে। তবে দই খাওয়ার পূর্বে আপনাকে নিশ্চিত করতে হবে যে, আপনি কোনো অনিরাপদ কিংবা ২ নাম্বার দই খাচ্ছেন না। তাছাড়া আজকালকার বাজারে খাঁটি দই খুঁজে পাওয়া মুশকিল। তবুও আপনাকে দেখে-শুনে জেনে-বুঝে দই কিনতে হবে। 

 

মাংস

গর্ভবতী নারী এবং তার অনাগত শিশুর শরীরের প্রতিটি কোষের বিল্ডিং ব্লকের সাহায্য করে মাংস। এক্ষেত্রে এই মাংস হতে পারে মুরগির, গরুর, ছাগলের, হাঁসের কিংবা খাওয়া যায় এমন কোনো পাখির। বলা হয়ে থাকে উচ্চ-প্রোটিনযুক্ত খাবারগুলির মাঝে এই মাংসও অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ খাবার হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকে৷ যেকোনো ক্যাটাগরির বিশেষ করে চর্বি ছাড়া মাংস প্রোটিন-সমৃদ্ধ হওয়ার পাশাপাশি, প্রচুর পরিমাণে আয়রনের খনি হিসাবেও কাজ করে৷ যা গর্ভবতী নারীর অনাগত শিশুকে তার লাল রক্তকণিকা সরবরাহের বিকাশে সাহায্য করে থাকে। 

 

এক্ষেত্রে একটি ব্যাপারে একেবারে সতর্ক না করলেই নয়! মনে রাখবেন, যখন আপনি গর্ভবতী হন তখন রক্তের পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়াটা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। যে কারণে গর্ভাবস্থায় রক্তাল্পতার রোগ দিতে পারে। এক্ষেত্রে এই রক্তস্বল্পতা দূর করতে মাংস এবং গরুর কলিজা খেতে পারেন। তাছাড়া যারা অনাগত শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশ নিশ্চিত করতে চান, তাদের উচিত প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় মাংস রাখা। যাইহোক! মাংসকে আপনি চাইলে বিভিন্ন উপায়ে খেতে পারেন। ভাতের সাথে, সালাদের সাথে, সবজির সাথে, চাউমিনের সাথে, নুডুলসের সাথে কিংবা স্টেক হিসাবেও খেতে পারেন এই মাংস। 

 

গর্ভাবস্থায় খাবার গ্রহণে বিধি নিষেধগুলি কি কি? 

 

গর্ভাবস্থায় খাবার গ্রহণে বিধি নিষেধ

Image by pch.vector on Freepik

 

গর্ভাবস্থায় কিংবা গর্ভাবস্থার পূর্বে কেবল গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা সম্পর্কেই জানা থাকলে হবে না। সেই সাথে জানতে হবে গর্ভাবস্থায় খাবার গ্রহণে বিধি নিষেধ সম্পর্কে। চলুন জেনে নেওয়া যাক এই সময়ে ঠিক কোন কোন খাবারগুলি আপনাকে ইগনোর করা উচিত: 

অপরিষ্কার ফল ও সবজি

আজকাল কাঁচা ফল এবং সবজি পরিষ্কার করা বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। কারণ বাজারে অতিরিক্ত পরিমাণ ফরমালিন মেশানোর কারণে ফল এবং সবজি…সবকিছুই হয়ে উঠেছে মাত্রাতিরিক্ত বিষাক্ত। যা ধোঁয়া ছাড়া খাওয়া কিংবা রান্না করা মানেই বিষকে গ্রহণের উদ্দেশ্যে প্রক্রিয়াজাত করা। তাছাড়া গর্ভবতী নারীর ক্ষেত্রে এই অপরিষ্কার ফলমূল এবং সবজি আরো বাজে প্রভাব ফেলতে পারে। যাইহোক! খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই ফলমূল এবং সবজিকে পরিষ্কার করে নিবেন। ভালোভাবে ধুঁয়ে তবেই তা সার্ভ করার সিদ্ধান্ত নিবেন। 

 

হাফ সিদ্ধ ডিম

অনেকেই হাফ সিদ্ধ ডিম খাওয়াকে সময়ের সেরা স্মার্টন্যাস মনে করে থাকেন। যা নিতান্তই ভুল ধারণা। এই হাফ সিদ্ধ ডিম যেমন সাধারণ অবস্থাতে খাওয়া যাবে না, ঠিক তেমনই গর্ভাবস্থায়ও খাওয়া যাবে না। ভালোভাবে ডিমকে সিদ্ধ করে কিংবা ভাজার সময় ডিমের ভেতরের অংশ ভালোভাবে ভাজা হলে তবেই তা খাবারের যোগ্য হিসাবে পরিগণিত হবে। পাশাপাশি যারা চায়ের সাথে ডিমের কুসুম মিশিয়ে খান তারা এই অভ্যাসটুকুকে গর্ভাবস্থায় ইগনোর করবেন। গর্ভাবস্থায় কোনোভাবেই ডিমের কাঁচা কুসুমের সাহায্যে তৈরি চা পান করা যাবে না। 

 

হাফ সিদ্ধ মাংস

যদিও গ্রামাঞ্চলে কেউ খুব একটা হাফ সিদ্ধ মাংস খায় না! তবে শহরাঞ্চলে বিশেষ করে উচ্চবিত্ত পরিবারগুলোতে খাবারের আয়োজনে হাফ সিদ্ধ মাংস রাখার প্রবণতা বেড়েছে। যা স্বাস্থ্যের জন্যে মারাত্মক ঝুঁকি হিসেবে কাজ করে। বিশেষ করে গর্ভাবস্থায় এই হাফ সিদ্ধ মাংস মায়ের দেহে এবং বাচ্চার বেড়ে উঠার ক্ষেত্রে বিরূপ প্রভাব ফেলে। সুতরাং অন্তত এই বিশেষ সময়টুকুতে হাফ সিদ্ধ মাংস খাওয়া থেকে নিজেকে বিরত রাখুন৷ 

 

হাফ সিদ্ধ সামুদ্রিক খাবার

এখানে সামুদ্রিক খাবার হিসাবে শুরুতেই চিংড়ি মাছের কথা বলা যাক। কারণ আমাদের বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সামুদ্রিক খাবার কিংবা সাধারণ মাছ হিসাবে চিংড়ি মাছ বেশ জনপ্রিয়। অনেকেই চিংড়ি মাছকে স্যুপ নুডলসের সাথে হাফ সিদ্ধ করে কিংবা হালকা ভেজে খেয়ে থাকেন৷ এতে করে মাছের ভেতরের অংশ পুরোপুরি সিদ্ধ হওয়ার সুযোগ পায় না। তাছাড়া পাহাড়ী এলাকায় থাকা গর্ভবতী নারীরাও অন্যান্য সামুদ্রিক খাবারের প্রতি যথেষ্ট আগ্রহী থাকে। তবে গর্ভাবস্থার এই বিশেষ সময়ে সামুদ্রিক খাবারকে কিছুটা ইগনোর করা জরুরি। এটি সম্ভব না হলে প্রয়োজনে ভালোভাবে সিদ্ধ করে খেতে হবে। 

 

অ্যালকোহল 

অ্যালকোহল জাতীয় খাবার কিংবা পানীয় আমাদের দেশের খুব কম সংখ্যক নারীরা গ্রহণ করে থাকেন৷ তবুও কেউ যে এ-ব্যাপারে একেবারেই আগ্রহী নয়, সে-ব্যাপারে নিশ্চয়তা দেওয়া যাচ্ছে। যারা অ্যালকোহল নিয়ে থাকেন কিংবা অ্যালকোহল আছে এমন ঔষধ সেবন করে থাকেন, তাদের উচিত গর্ভাবস্থায় তা পুরোপুরি ইগনোর করা। কারণ এই অ্যালকোহল অনাগত শিশুর রক্তপ্রবাহ বাড়িয়ে দেয়। তাছাড়া বিভিন্ন শারীরিক ক্ষতিও ডেকে আনতে পারে। 

 

অতিরিক্ত ক্যাফেইন

ক্যাফেইন জাতীয় খাবার বা পানীয় গ্রহণ না করলে যাদের রাতে ঘুম আসে না তাদের গর্ভাবস্থায় সতর্ক থাকা উচিত। একসাথে ৩/৪ কাপ চা, কফি এ-সময়ে স্কিপ করতে হবে। তাছাড়া দিনে অনেক বেশি পরিমাণ চা, কফি গ্রহণ করাকে পুরোপুরি না বলতে হবে। গবেষণা বলছে গর্ভাবস্থায় প্রতিদিন ২০০ মিলিগ্রামের বেশি চা বা কফি পান করা উচিত নয়। নতুবা অনাগত শিশু ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে। 

 

এনার্জি ড্রিংক 

গর্ভাবস্থায় স্প্রাইট, কোকাকোলাসহ বিভিন্ন ড্রিংক ইগনোর করতে হবে। তাছাড়া যারা ভেবে থাকেন এসব ড্রিংকস পান করলে হজম ভালো হয়, তাদেরও উচিত এই ভুল ধারণা থেকে ফিরে আসে। গবেষণা বলছে এসব ড্রিংকস খাবার হজমকে সহজ করা তো দূরে থাক, বরং শারীরিক সুস্থতা যেটুকু বজায় রাখা তারও ব্যাঘাত ঘটায়। 

 

গর্ভবতী মায়ের ৫ টি বিপদ চিহ্ন

 

গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা এবং গর্ভবতী নারীর খাবার গ্রহণে সতর্কতা সম্পর্কিত সকল তথ্য নিয়ে তো আলোচনা করলাম! এবারে আর্টিকেলের এই অংশে আমরা আলোচনা করবো গর্ভবতী মায়ের ৫ টি বিপদ চিহ্নগুলি কি কি হতে পারে সে-সম্পর্কে। এসব চিহ্ন চোখে পড়লেই বা লক্ষ্য করলেই দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে এবং ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। 

 

রক্তপাতের সমস্যা দেখা দেওয়া 

গর্ভাবস্থায় অনেক সময় হঠাৎ করেই রক্তক্ষরণ দেখা দেয়। সাধারণত গর্ভফুল বড় হয়ে গেলে বা ফুলে গেলে এমনটা হয়ে থাকে। তাছাড়া গর্ভবতী নারীর ক্ষেত্রে যখন রক্ত জমাট বাঁধতে দেরি করে কিংবা এই প্রক্রিয়ায় যখন বাড়তি সময় ব্যয় হয় ঠিক তখনই রক্তপাত দেখা দেয়। 

 

আর এই রক্তক্ষরণের বিষয়টিকে গর্ভবতী মায়ের ৫ টি বিপদ চিহ্নের একটি বিপদ চিহ্ন হিসাবে ধরা হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে যদি আপনার প্রচণ্ড রক্তক্ষরণ হয় এবং তীব্র পেটে ব্যথা হয় সেক্ষেত্রে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে কিংবা হাসপাতালে পৌঁছাতে হবে। 

 

খিচুনির সমস্যা দেখা দেওয়া 

যদি গর্ভাবস্থায় আপনার খিচুনির সমস্যা দেখা দেয় সেক্ষেত্রে ভেবে নিবেন আপনি বেশ কঠিন সময় কিংবা ঝুঁকিপূর্ণ সময় পার করছেন। এই খিচুনির সমস্যা একজন হবু মাকে যথেষ্ট বিপদে ফেলতে পারে। কেবলমাত্র মায়ের ক্ষতিই নয়! এই খিচুনির সমস্যা মায়ের পাশাপাশি একইসাথে সন্তানকেও ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। সুতরাং মা এবং শিশু উভয়কেই বাঁচিয়ে রাখতে গর্ভবতী নারীর মাঝে খিচুনির সমস্যা দেখা দিলে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করুন৷ 

 

প্রচন্ড জ্বর অনুভুত হওয়া

স্বাভাবিকভাবেই যেকোনো অবস্থায় জ্বর আসতে পারে। তাছাড়া জ্বর আসার ব্যাপারটিকে বিভিন্ন জীবাণুর দেহ থেকে বিদায় নেওয়ার সুযোগ হিসাবে ধরা হয়ে থাকে। তবে গর্ভাবস্থায় অনেক বেশি জ্বর আসে এবং তা ২/১ দিন স্থায়ী হয় সেক্ষেত্রে আপনাকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে হবে ও ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। পাশাপাশি জ্বরের সাথে যদি আপনি প্রসাবের সময়ে জ্বালাপোড়া অনুভব করেন, সেক্ষেত্রে ধরে নিতে হবে পরিস্থিতি মারাত্মক। যা আপনাকে কেবল ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ীই সামাল দিতে হবে। 

 

প্রসব বেদনা স্থায়ী হওয়া

গর্ভবতী নারীর ক্ষেত্রে সন্তান জন্মদানের সময় প্রসব বেদনা হতেই পারে। যা বেশ স্বাভাবিক বিষয় হিসাবেই পরিগণিত হয়। তবে এই ব্যাথা যদি অনেক লম্বা সময় ধরে অনুভুত হতে থাকে সেক্ষেত্রে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। কারণ এই প্রসব বেদনা স্থায়ী হওয়ার ব্যাপারটিকে একজন গর্ভবতী নারীর ৫ টি বিপদ চিহ্নের একটি হিসাবে ধরা হয়ে থাকে। মনে রাখবেন এই ব্যাথার সময়সীমা যেনো ১২ ঘন্টার বেশি না হয়। তাছাড়া বাচ্চা জন্মানোর সময় যদি মাথার আগে দেহের অন্য কোনো অংশ বেরিয়ে আসে তবে ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতি মাথায় রেখেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। 

 

তীব্র মাথা ব্যাথা এবং চোখে ঝাপসা দেখা

গর্ভকালীন সময়ে শেষের দিকে কিংবা মাঝামাঝি সময়ে মা প্রচুর মাথা ব্যাথা অনুভব করতে পারে। পাশাপাশি চোখে ঝাপসা দেখার সমস্যাও দেখা দিতে পারে। যদিও গর্ভকালীন সময়ে এসব সমস্যাকে বেশ স্বাভাবিক সমস্যা হিসাবেই ধরা হয়ে থাকে। তবে অতিরিক্ত পরিমাণে মাথা ব্যাথা হলে কিংবা চোখে ঝাপসা দেখার সমস্যা অনেক বেশি বেড়ে গেলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। 

 

গর্ভবতী হওয়ার কতদিন পর বমি হয়? 

কোনো নারী গর্ভবতী হওয়ার ৯ সপ্তাহ পর থেকেই এই বমির সমস্যা দেখা দিতে পারে। বমি বমি ভাব কিংবা সরাসরি বমি আসার সমস্যার পেছনে কাজ মর্নিং সিকন্যাস। তবে বেশিরভাগ নারীর ক্ষেত্রেও এই বমির সমস্যা গর্ভকালীন সময়ের ৯ থেকে ১২ সপ্তাহ সময় পর্যন্ত স্থায়ী হয় এবং পরবর্তীতে তা সেরে যায়। তাছাড়া কিছু কিছু গর্ভবতী নারীর ক্ষেত্রে গর্ভকালীন সময়ের পুরো বছর জুড়েই এই সমস্যা দেখা দিতে পারে৷ 

 

গর্ভাবস্থায় সহবাস সম্পর্কিত তথ্য এবং ঝুঁকিগুলি কি কি? 

 

যেকোনো সুস্থ গর্ভাবস্থায় সহবাসে কোনো ঝুঁকি কাজ করে না৷ তবে গর্ভবতী নারী গর্ভাবস্থায় কোন অস্বাভাবিক পেট ব্যথা বা রক্তপাত অনুভব করলে তা পরবর্তীতে মারাত্মক ঝুঁকির সৃষ্টি করতে পারে। এক্ষেত্রে অবিলম্বে গর্ভবতী নারীর দ্রুত ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করা উচিত। 

গর্ভবতী হওয়ার পর কি মাসিক হয়? 

গর্ভবতী হওয়ার পর কোনো নারীর ক্ষেত্রেই মাসিক হওয়ার সুযোগ থাকে না বা মাসিক হয় না। এক্ষেত্রে অনেকেই হয়তো রক্তপাতকে মাসিক ভেবে ভুল করতে পারেন। সুতরাং তা আগে থেকেই জানিয়ে রাখলাম। এ-সময় নির্দিষ্ট স্থানে রক্তের দাগ পেলে বা রক্তের দেখা পেলে তাকে মাসিক ছাড়া অন্য যেকোনো সমস্যার ফল হিসাব ধরে নিতে হবে এবং ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। 

 

যারা গর্ভকালীন সময়ে রক্তের দেখা পাবেন তাদের উচিত মিসক্যারেজ, এক্টোপিক, প্রেগনেন্সি গর্ভফুল বা প্লাসেন্টারের কোন সমস্যা বা সংক্রমণ ইত্যাদি নিয়ে ভাবা কিংবা দ্রুত অভিজ্ঞ কারো সাথে বিষয়টি শেয়ার করা। যদিও রক্তপাতের সমস্যাকে গুরুতর সমস্যা হিসাবে ধরা হয় না! 

 

ইতি কথা

ভ্রূণের সঠিক বিকাশ নিশ্চিত করতে আজ থেকেই গর্ভবতী মায়ের যত্ন নিন। ফলো করুন গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা এবং এ-সম্পর্কিত সকল টিপস। আমাদের আজকের আর্টিকেল এতোটুকুই। মনে রাখবেন গর্ভবতী মায়ের ক্ষেত্রে গর্ভাবস্থার আগে, গর্ভকালীন সময়ে এবং গর্ভাবস্থার পরবর্তী সময়ে পুষ্টিকর খাদ্য বেশ জরুরি। সুতরাং তা সর্বাবস্থায় নিশ্চিত করার চেষ্টা করতে হবে। আশা করি মা এবং অনাগত শিশু এসব খাবারে থাকা পুষ্টির প্রভাবে এবং বাড়তি যত্নে সবসময় সুস্থ থাকবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button