বর্তমান যুগ তথ্যপ্রযুক্তির যুগ। মোবাইল ইন্টারনেট এখন সবার হাতের মুঠোয়। অনলাইনে এখন মুহুর্তের মধ্যেই সব পাওয়া যাচ্ছে। মানুষ দিনদিন ইন্টারনেট নির্ভর হয়ে পড়ছে। বিশাল পরিমানে মানুষ ইন্টারনেটের দিকে ঝুকে পড়ছে। অনেকে আবার ইন্টারনেটকে কাজে লাগিয়ে অনলাইনে আয় বা উপার্জন করছেন লাখ লাখ টাকা। আজকে আপনাদের সাথে অনলাইনে আয় করার সহজ উপায় নিয়ে আলোচনা করবো।
Table of Contents
কিভাবে অনলাইন থেকে সহজে ইনকাম করা যায়
বিলিয়ন বিলিয়ন মানুষ প্রতিদিন ইন্টারনেটে আসছেন। কত বিশাল একটা মার্কেট ভেবে দেখুন। চাইলে আপনিও পারেন অন্যদের মতো অনলাইনে আয় করতে। অনলাইনে আয় করার জন্য অনেক উপায় আছে। তাদের মধ্য থেকে আজকে আমরা অনলাইনে আয় করার সেরা ১০টি উপায় আপনাদের জন্য তুলে ধরছি।
১. ব্লগিং করে ইনকাম
তথ্য প্রযুক্তির এই যুগে কোনো বিষয়ে প্রশ্ন থাকলে বা জানার ইচ্ছা হলে আমরা সবার আগে সেটা গুগলকে জিজ্ঞেশ করি। আর গুগল সে অনুযায়ী আমাদেরকে ফলাফল প্রদান করে। সেখান থেকে আমরা যেকোনো একটা আর্টিকেল পড়ে নিজেদের প্রশ্নের উত্তরটা জানতে পারি।
কিন্তু গুগল ওসব আর্টিকেল কখনো নিজ থেকে লিখেনা। অন্যকেউ সেই আর্টিকেলগুলোকে লিখে গুগলে আপলোড করে।
কেউ যখন কোনো নির্দিষ্ট ব্যক্তির লেখা আর্টিকেল পড়ে তখন গুগল সেই আর্টিকেলের লেখককে একটা নির্দিষ্ট এমাউন্ট পে করে।
অনলাইনে অর্থ উপার্জনের জন্য ব্লগিং সবচে জনপ্রিয় এবং সার্বজনীন পদ্ধতি। যারা লেখালেখি পছন্দ করেন তারা একটি নির্দিষ্ট বিষয় কে ফোকাস করে ব্লগিং শুরু করতে পারেন। আপনি যেকোনো বিষয় নিয়ে ব্লগিং করতে পারেন।
সমসাময়িক প্রচলিত এবং জনপ্রিয় কিছু টপিক থেকে আইডিয়া নিয়ে আপনি নিজেও সেই বিষয়ে লেখালেখি শুরু করতে পারেন, যেমন- ট্রাভেল ব্লগ, ফুড ব্লগ কিংবা ধরুন অর্থনীতি এবং বিনোদন সংক্রান্ত ব্লগ!
অজস্র টপিক আছে লেখার মতো! আপনাকে শুধু মাথা খাটিয়ে বের করতে হবে কোনটা আপনি ভালো লিখতে পারবেন! তারপর আরকি! শুরু করে দিন। আপনার যদি রিসার্চ করে লেখার এবিলিটি থাকে এবং আপনার লেখা যদি মানসম্মত হয়, তবে একসময় সাড়া পাবেনই।
ব্লগিং করে অনলাইনে আয় করার সহজ উপায়
ব্লগিং এর ক্ষেত্রে একটা ব্যপার মাথায় রাখাটা জরুরি। ব্লগপোস্ট লেখার পর আপনি সাথে সাথেই সেটার আউটকাম দেখতে পারবেন না।
বলা হয়ে থাকে একটি ব্লগপোস্ট তার কাংখিত পরিমান ভিউ পেতে কয়েকমাস পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। তাই ধৈর্যহারা হলে চলবেনা। আপনার লিখা মানসম্মত হলে মানুষ নিজেই খোজ করে আপনার লিখা পড়বে।
নির্দিষ্ট বিষয়ে লেখার পাশাপাশি এরসাথে প্রাসঙ্গিক অন্যান্য বিষয় গুলো আপনার লেখায় তুলে ধরার চেষ্টা করুন এতে আপনার লেখার বিষয়বস্তুর পরিধি বাড়বে।
পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিউয়ার্স পেলে আপনি গুগল এডসেন্সের মাধ্যমে আপনার ওয়েবসাইটটিকে অনুমোদন করে সেখান থেকে ভালো পরিমাণে ব্লগিং করে অনলাইনে আয় করতে পারবেন।
ব্লগিং এর সবচে ভালো ব্যপার হচ্ছে এখান থেকে আপনি খুব ভালো একটা প্যসিভ ইনকাম আর্ন করতে পারবেন। একবার কস্ট করে ভালো মানের কিছু ব্লগপোস্ট যদি লিখতে পারেন, তাহলে সেগুলো মানুষ যতদিন পড়বে ততদিন আপনি কিছু না করেও সেখান থেকে গুগল এডসেন্সের মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।
আবারও বলছি SEO ব্যাপারটা সব সময় মাথায় রাখবেন। কোন একটা ব্লগ পোস্ট লেখার সময় সেই বিষয় নিয়ে কিওয়ার্ড রিসার্চ করতে কখনোই ভুলবেন না। আপনি যে বিষয়ে লিখছেন সেই বিষয়ে প্রাসঙ্গিক কিওয়ার্ড এবং লেখার গুনগত মানের দিকে অবশ্যই নজর দিন। এতে গুগলে র্যংক করা সহজ হবে আপনার জন্য।
২. YouTube থেকে ইনকাম
অন্যরা যদি YouTube থেকে ইনকাম করতে পারে, তাহলে আপনিও পারবেন।
কোন একটি নির্দিষ্ট টপিককে ফোকাস করে এগিয়ে যান ।
উদাহরণস্বরূপ, আপনি এডুকেশনাল টিউটোরিয়াল তৈরি করতে পারেন, ভিডিও গেইম স্ট্রিম করতে পারেন, বিভিন্ন প্রোডাক্ট রিভিউ করতে পারেন, কোন একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে যদি আপনি পারদর্শী হয়ে থাকেন তাহলে সেটি অন্যদেরকে শেখাতে পারেন, প্র্যাঙ্ক ভিডিও তৈরি করতে পারেন বা অন্য যেকোন কিছুর উপরে ভিডিও তৈরি করতে পারেন যাদের জন্য আপনি মনে করেন পর্যাপ্ত পরিমাণে দর্শক আছে।
ইউটিউবে অর্থ উপার্জনের প্রথম এবং প্রধান বিষয় হলো মানুষ দেখতে চান এমন ভিডিও তৈরি করা। আপনার ভিডিওগুলি দেখার জন্য ভিউয়ার্সদের আগ্রহ তৈরি করতে মজাদার শিরোনাম তৈরি করুন ৷ কোয়ালিটি ভিডিও তৈরি করুন।
1,000-সাবস্ক্রাইবারের মাইলস্টোন ছুঁতে পারলে , আপনি YouTube Adsense এ আপনার চ্যানেলটি মনেটাইজ করতে পারবেন।
YouTube চ্যানেলে ভিউ জেনারেট করতে এবং আপনার দর্শকদের ধরে রাখার জন্য আপনাকে অবশ্যই ধারাবাহিকভাবে ভিডিও আপলোড করতে হবে। এই মুহূর্তে দর্শক কি দেখতে চাচ্ছেন সেটা সম্পর্কে আপনার ভালো একটা ধারণা থাকতে হবে। এবং সে অনুযায়ী ভিডিও আপলোড দিতে হবে।
আপনার ভিডিও যদি মানসম্মত হয় তাহলে একসময় আশানুরূপ ফল পাবেনই, সেটা দেরিতে হলেও!
ইউটিউব ভিডিও আপলোডের ক্ষেত্রে SEO একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আপনার ভিউয়ার্সরা খোঁজ করছেন এমন সকল কিওয়ার্ড ব্যবহার করুন। এতে করে আপনার ভিডিও সহজেই নজরে আসবে।
৩. ওয়েব ডিজাইনিং এন্ড ডেভেলপমেন্ট করে আয়
বর্তমান সময়ে ওয়েব ডিজাইনিং এবং ডেভেলপিং অনেকর কাছেই খুব লোভনীয় একটি পেশা। একজন ওয়েব ডেভেলপার প্রতি বছর গড়ে ৭২,০০০ ডলার আয় করে থাকেন।
দিনদিন ইন্টারনেটের ব্যবহার তুমুল বেড়ে চলেছে।
সে সাথে পাল্লা দিয়ে গ্রাহকদের চাহিদা মেটাতে প্রতিদিন ইন্টারনেটে যুক্ত হচ্ছে হাজারো ওয়েবসাইট। এটা এমন একটি সেক্টর যার চাহিদা দিনকে দিন বেড়েই চলেছে। আগামী দশকে ওয়েব ডেভেলপারদের ডিমান্ড বর্তমানের চেয়ে শতকরা ২০ ভাগ বৃদ্ধি পাবে বলে ধারনা করা হচ্ছে।
এছাড়া ওয়েব ডিজাইনার এবং ডেভেলপারদের আয় অভাবনীয়! একটি সাধারণ মানের টাকা ইনকাম করার ওয়েবসাইট তৈরি করেও ওয়েব ডেভেলপাররা খুব ভালো এমাউন্টের অর্থ উপার্জন করে থাকে।
ওয়েব ডিজাইন এবং ডেভেলপমেন্ট সবসময়ই হাই ডিমান্ড স্কিল! এই পেশায় একবার নিজের অবস্থান তৈরি করতে পারলে অন্যদের চেয়ে খুব দ্রুত নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারবেন।
কিভাবে ওয়েব ডিজাইনিং এন্ড ডেভেলপমেন্ট করে আয় করা যায়?
ওয়েব ডিজাইন এবং ডেভেলপমেন্টের শিখতে গেলে আপনাকে সর্বপ্রথম কোডিং শিখতে হবে। HTML,CSS, BOOTSTRAP, JAVASCRIPT, WORDPRESS এর মতো ফ্রেমওয়ার্ক আয়ত্বে আনতে হবে।
অনলাইনেও কোর্সগুলো করে নিতে পারেন। দিনদিন এটির চাহিদা এতটাই বেড়েছে যে ইউটিউবেও প্রচুর ভিডিও পাবেন। Anisur Rahman স্যরের ভিডিওগুলো ফলো করতে পারেন। ওনার বুঝানোর দক্ষতা অসামান্য। ইংরেজি লিসেনিং এ প্রবলেম না থাকলে freecodecamp এর চ্যনেলটি দেখতে পারেন।
প্রফেশনাল কিছু ই-লার্নিং ওয়েবসাইটের কথা বলছি যারা আপনাকে এক্ষেত্রে সাহায্য করতে পারে,
- www.cousera.com
- www.codeacademy.com
- www.udemy.com
৪. গ্রাফিক ডিজাইন
সৃজনশীল ব্যক্তিদের জন্য, এটি অনলাইনে অর্থ উপার্জনের একটি চমৎকার উপায়। একজন গ্রাফিক ডিজাইনার প্রতি বছর গড়ে ৫৪,০০০ ডলার আয় করে থাকেন। মার্কেটপ্লেসে একজন ভালো গ্রাফিক ডিজাইনারের প্রচুর চাহিদা। এবং সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে সেটা বেড়েই চলেছে।
একজন গ্রাফিক ডিজাইনারের ক্যারিয়ারের পথ একজন ওয়েব ডেভেলপারের মতই। আপনাকে প্রয়োজনীয় স্কিল ডেভেলপ করতে হবে সবার আগে ।
যেমন, একজন ওয়েব ডিজাইনারকে অবশ্যই ইউজার এক্সপেরিয়েন্স, ইউজার ইন্টারফেস এবং এইচটিএমএল ও সিএসএস এর মূল বিষয়গুলো আয়ত্বে আনতে হবে।
অন্যদিকে, একজন লোগো ডিজাইনারকে কালার থিওরি, টাইপোগ্রাফি, এবং ডিজাইন টুল যেমন Adobe Illustrator বা CorelDRAW আয়ত্ত করা উচিত।
ইউটিউবে পর্যাপ্ত পরিমানে ভিডিও পেয়ে যাবেন। Learn with shohagh চ্যনেলটি ফলো করতে পারেন বেসিকের জন্য।
এছাড়াও বিভিন্ন ই-লার্নিং সাইটের সাহায্য নিতে পারেন। ওরা খুবই প্রফেশনাল।
- http://www.coursera.com
- http://www.udemy.com
গ্রাফিক ডিজাইনিং এর কাজ করার জন্য জনপ্রিয় কিছু সাইট,
- designcrowd.com
- minty.com
- weworkremotely.com
- 99design.com
৫. কন্টেন্ট লিখে আয়
যাদের লেখালেখির দক্ষতা রয়েছে তাদের জন্য কন্টেন্ট রাইটিং হতে পারে অনলাইনে অর্থ উপার্জনের অন্যতম সেরা উপায়। কন্টেন্ট রাইটারদের বার্ষিক গড় আয় প্রায় ৫৮,০০০ ডলার। যেটা অন্যান্য পেশার চেয়ে বেশ খানিকটা এগিয়ে এবং লোভনীয় বটে।
মানুষ জন্মলগ্ন থেকেই কৌতুহলপ্রিয়! মানুষ জানতে চায়, শিখতে চায়! প্রতিদিন মানুষ কোনো-না-কোনো কারনে গুগলে এটা সেটা সার্চ করে। আপনি সেসব সম্পর্কে তথ্য দিয়ে লিখতে পারেন। তারা যদি আপনার লেখাটি পড়ে তবে আপনি সেখান থেকে আয় করতে পারবেন।
লেখার মান ভালো হলে খুব দ্রুতই সাড়া পাবেন। এবং আপনি একজন কন্টেন্ট রাইটার হিসেবে নিজেকে প্রকাশ করতে পারবেন।
আপনার লেখা কন্টেন্টের পর্যাপ্ত পরিমান ভিউয়ার পেয়ে গেলে গুগল এডসেন্সের মাধ্যমে আয় করতে পারবেন। এছাড়াও বিভিন্ন মার্কেটপ্লেসেও কন্টেন্ট রাইটারদের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। যেমনঃ fiver, upwork. আপনি চাইলে এসব মার্কেটপ্লেসেও ক্লায়েন্টদের চাহিদা অনুযায়ী কন্টেন্ট লিখে আয় করতে পারেন।
আরোকিছু সাইট যেমনঃ
- www.verblio.com
- www.seobutler.com
- www.expresswriters.com
- www.textbroker.com
এগুলোতেও আপনি একজন কন্টেন্ট রাইটার হিসেবে কাজ করতে পারেন।
লেখার দক্ষতা ছাড়াও, SEO এবং কিওয়ার্ড রিসার্স এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। এগুলোর ব্যসিক ধারনা থাকলে অন্যদের চেয়ে আপনি অনেকটাই এগিয়ে থাকবেন।
৬. ইকমার্স ওয়েবসাইট বানিয়ে ইনকাম
অনলাইনে বিভিন্ন ধরনের প্রোডাক্ট বিক্রি করা হতে পারে আপনার অর্থ উপার্জনের অন্যতম সেরা উপায়। অনলাইনে এতো বিশাল সংখ্যক মানুষ। তাদের কাছে যদি নিজেকে একটা ব্র্যন্ড হিসেবে দাড় করাতে পারেন, তাহলে অনলাইনে তাদের সাথে বিজনেস করে বেশ ভালো অংকের অর্থ বাগিয়ে নিতে পারবেন।
মার্কেট রিসার্চ করুন। এইমুহুর্তের ট্রেন্ডিং প্রোডাক্টগুলোকে শর্টলিস্ট করে ফেলুন।আগামীতে এই প্রোডাক্টের চাহিদা থাকবে কিনা সেটা বিবেচনা করুন। প্রোডাক্ট সাপ্লাই চেইন, হোলসেল/ রিটেইল মার্কেট এনালাইসিস করে তারপর আগান।
এইমুহুর্তে মার্কেটপ্লেসে ওই প্রোডাক্টগুলো নিয়ে কারা কাজ করছে দেখুন। তাদেরকে অনুসরন করুন, আইডিয়া নিন
নিজের ই-কমার্স বিজনেস স্টার্ট করার জন্য কিছু অনলাইন প্লাটফর্মের সাহায্য নিতে পারেন:
- www.zyro.com
- www.wooCommerce.com
- www.prestashop.com
- www.shopify.com
৭. ফ্রিল্যান্সিং করে ইনকাম
আপনি যদি একজন ওয়েব ডেভেলপার, গ্রাফিক ডিজাইনার, কন্টেন্ট রাইটার ইত্যাদি হয়ে থাকেন তবে আপনি অনলাইনে বিভিন্ন মার্কেটপ্লেসে এসব স্কিলকে কাজে লাগিয়ে খুব সহজেই আয় করতে পারেন। আপনি যদি নিজের কাজটা ভালোভাবে পারেন, তবে, এমন অসংখ্য প্রতিষ্ঠান আছে যারা আপনার স্কিলের জন্য আপনাকে হায়ার করবে।
আপনি যদি স্কিল্ড না হয়ে থাকেন, তাহলে নিজের পছন্দসই কোনো একটি সেক্টরে নিজেকে আগে দক্ষ করে গড়ে তুলুন। ইন্টারনেট এখন প্রায় সবকিছুকেই অনেক সহজ করে তুলেছে। অনলাইনে আপনি প্রায় সবকিছুর ওপরই কোর্স পাবেন! তাও আবার ফ্রি অফ কস্ট। টাকা ইনকাম করার সহজ উপায় বাংলাদেশে
রান্নাবান্না থেকে শুরু করে মহাকাশ গবেষণা! কি নেই অনলাইনে? আপনাকে যেটা করতে হবে সেটা হচ্ছে নিজের স্ট্রংজোনটাকে খুজে বার করতে হবে। আপনি কি করতে পছন্দ করেন, কোনটা আপনার ভালো লাগছে, সেটা বোঝাটা জরুরি। নিজের কাজটাকে যদি আপনার ভালো না লাগে তাহলে সেটাতে বেশিদিন আগ্রহ ধরে রাখতে পারবেন না।
ধরুন আঁকা আঁকি আপনার বেশি ভালো লাগেনা, আপনার লেখালেখির ব্যাপারে আগ্রহ বেশি! তাহলে গ্রাফিক্স আপনার জন্য না! আপনার জন্য কন্টেন্ট রাইটিং রাইট চয়েস।
আবার কারো কোডিং, প্রোগ্রামিং এর দিকে ঝোঁক আছে, তাহলে ওয়েব ডেভেলপার শিখাটাই তারজন্য বেটার।
ফ্রিল্যান্সিং করে ইনকাম করার কিছু জনপ্রিয় সাইট-
- Fiverr
- Upwork
- Guru
- Freelancer
- People Per Hour
৮. অনলাইন কোর্স করিয়ে আয়
আপনি যদি কোনো বিষয়ে দক্ষ হয়ে থাকেন, হতে পারে সেটা ইংরেজি, গনিত, কম্পিউটার শিক্ষা! অথবা অন্য যেকোনকিছু। অনলাইনে আপনার সেই বিষয়ে কোর্স বিক্রি করেও আপনি আয় করতে পারেন।
যেমন ধরুন, মুনজেরিন শহিদ অনলাইনে ইংরেজি শিখার কোর্স বিক্রি করছে। ওনার মতো এতো হিউজ ফ্যনবেইস না থাকলেও আপনার কোর্সের কোয়ালিটি ভালো হলে আপনি সাড়া পাবেনই । আত্মবিশ্বাস নিয়ে এগিয়ে যান। ছোটো থেকেই বড় হতে হয়। মুনজেরিন শহিদও জিরো থেকেই শুরু করেছিলেন।
বিদেশে স্কলারশিপ পাওয়ার সহজ উপায়
গ্লোবাল ই-লার্নিং বাজার 2026 সাল নাগাদ প্রায় $400 বিলিয়ন এ পৌঁছাবে বলে অনুমান করা হয়েছে। কতো হিউজ একটা মার্কেট ভেবে দেখেছেন? আপনার যদি কোনো নির্দিষ্ট বিষয়ে দক্ষতা থেকে থাকে এবং কাউকে শিখানোটাকে উপভোগ করেন, তাহলে অনলাইন কোর্স বিক্রি শুরু করার জন্য এটি একটি চমৎকার সময়।
ডিজিটাল কোর্সগুলি বিভিন্ন ফর্ম্যাটে হয়ে থাকে, সাধারণ PDF ডাউনলোড থেকে ভিডিও পর্যন্ত। জনপ্রিয় অনলাইন কোর্সের বিষয়গুলির মধ্যে রয়েছে কম্পিউটার, স্বাস্থ্য এবং চিকিৎসা, ব্যবসা এবং উদ্যোক্তা, অর্থ ও বিনিয়োগ এবং পার্সোনাল ডেভেলপমেন্ট ।
৯. মোবাইল অ্যাপ তৈরি করে অনলাইনে আয়
এপ ডেভলপার না হলে এপ তৈরি করা যায়না এটা ঠিক নয়। কিছু ওয়েবসাইট যেমনঃ
- www.appypie.com
- www.appInstitute.com
- www.mobincube.com
apps তৈরি করে অনলাইনে আয় করার সহজ উপায়
আপনার যদি এপ ডেভেলপমেন্ট নিয়ে কোনো ধারনা নাও থাকে তবুও এইসব ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আপনি খুব সহজেই একটি এপ ডেভেলপ করে ফেলতে পারবেন। আরেকটা ইন্টারেস্টিং ব্যপার শেয়ার করি, মাত্র ৫০০ টাকা রেজিস্ট্রেশন ফি দিয়ে আপনি ৫০টি এপ প্লেস্টোরে আপলোড দিতে পারবেন, এবং সেখান থেকে আয় করতে পারবেন। ভাবা যায়!!!
আপনার যেটা প্রয়োজন সেটা হলো ইউনিক আইডিয়া, অর্থাৎ এমন কিছু টাকা আয় করার apps তৈরি করা যেটা মানুষের কাজে আসবে। আশেপাশের মানুষ কি চাচ্ছে, যেটা প্লেস্টোরে নাই?
কিছুদিন আগ পর্যন্তও হুমায়ুন আহমেদের বইগুলোর ভালোকোনো এপ ছিলোনা পরিপূর্ণ আকারে। কেউ একজন খুব গুছিয়ে হুমায়ুন সমগ্র আকারে সেটাকে প্রকাশ করেছে। তার সেই এপটি বর্তমানে খুবই জনপ্রিয়। এবং বলাই বাহুল্য সেই ভাইয়াটি প্রচুর আয় করছেন সেই এপ থেকে।
দেখুন, কি নিয়ে এপ বানাবেন সেটা কেউ আপনাকে বলে দিবেনা। কিন্ত আপনি যদি মানুষের চাহিদা বা প্রয়োজনটা ধরতে পারেন। তাদের জিবনমানকে সহজ করে দেয়ার জন্য কিছু করতে পারেন আপনার এপ দিয়ে, তবে আপনাকে আটকাবে কে? পাঠাও কিংবা উবারের কথা চিন্তা করুন!
ভাবুন!! কি নিয়ে এপ বানানো যায় ভাবুন!
১০. অনলাইন টিউটর হতে পারে আয়ের আরেকটি উপায়
আমরা সবাই কোনোনা কোনো বিষয়ে ভালো। কেউ হয়তো গনিতে ভালো, কেউবা ইংরেজিতে কিংবা কেউ বিজ্ঞানের সাবজেক্টগুলোতে। কিন্ত অনেক মানুষ আছেন, যারা আপনি যেই সাবজেক্টগুলোতে ভালো সেসব বিষয়ে তারা ভালো বুঝেন না। আপনি চাইলে এসব সাবজেক্ট অনলাইনে প্রাইভেট পড়িয়ে দারুন আয় করতে পারেন।
আরেকটা ব্যপার হচ্ছে অনলাইনে পড়ানোটা অফলাইনে পড়ানোর চেয়েও বেশি পে করবে আপনাকে। জ্যমে বসে থাকতে হবেনা, জার্নির ধকল নিতে হবেনা, ভাড়ার টাকা বেচেঁ গেলো! এতটুকুই বা কম কিসে!
- www.caretutors.com
- www.chegstudy.com
- www.preply.com
- www.tutorme.com
- www.skooli.com
এই সাইটগুলোতে একাউন্ট খুলে আপনার পছন্দের বিষয়ে পড়িয়ে আয় করতে পারেন।
এছাড়াও আপনাদের সুবিধার্তে, অনলাইনে আয় করার সহজ উপায় সম্পর্কে আরো কিছু পদ্ধতি তুলে ধরা হলো।
১১. অ্যাপ এবং ওয়েবসাইট রিভিউ থেকে আয়
অনেক উদ্যোক্তা এবং প্রতিষ্ঠাতারা তাদের নিজেদের ওয়েবসাইট সম্পর্কে খুব সচেতন থাকেন। তারা জানতে চান তাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করার সময় একজন ভিজিটরের কেমন অভিজ্ঞতা হচ্ছে।
তাদের ওয়েবসাইটে কোনোকিছুর ঘাটতি আছে কিনা কিংবা কোনো পরিবর্তন আনতে হবে কিনা সেটা তারা একজন ইউজারের থেকে জানতে চান। কারন একটি ওয়েবসাইট যেকোনো প্রতিষ্ঠানকে সরাসরি প্রভাবিত করে।
আপনি তাদের ওয়েবসাইট বা অ্যাপ ভিজিট করার সময় একটি ভিডিওর মাধ্যমে ওই ওয়েবসাইটের উদ্যোক্তার কাছে আপনার ধারণা এবং প্রতিক্রিয়া জানাতে পারেন।
আপনার ভিডিও মাত্র 20 মিনিটের হবে , সে হিসেবে আপনি যদি প্রতি ঘন্টায় তিনটি ভিডিও করেন, প্রতিটির জন্য 10 ডলার পেমেন্ট রেটে আপনি $30 উপার্জন করতে পারবেন প্রতি ঘন্টায়। ওয়েবসাইট পর্যালোচনা করার জন্য, আপনার অবশ্যই সমালোচনামূলক এবং যৌক্তিক চিন্তাভাবনা দক্ষতা, চমৎকার যোগাযোগের ক্ষমতা এবং ওয়েবসাইটের কার্যকারিতা এবং ডিজাইনের জ্ঞান থাকতে হবে।
এখানে কিছু মার্কেটপ্লেসের নাম দেয়া হলো যাদের মাধ্যমে আপনি ওয়েবসাইটের রিভিউ প্রদান করে আয় করতে পারবেন।
- www.ubertesters.com
- www.userbrain.com
- www.testbirds.com
- www.userlytics.com
- www.trymyui.com
১২. অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে অনলাইনে আয়
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং হল অনলাইনে অর্থ উপার্জনের অন্যতম জনপ্রিয় উপায়। Amazon , Shopify এদের মতো সাইটে প্রচুর প্রোডাক্ট আছে।
আপনাকে যেটা করতে হবে সেটা হচ্ছে এই মুহুর্তে খুব জনপ্রিয় এমন কিছু প্রোডাক্ট সিলেক্ট করতে হবে। তারপর সেগুলোকে সেল করার জন্য একটি ব্লগপোস্ট লিখতে হবে। সেই আর্টিকেল বা ব্লগপোস্টে আপনি সেই প্রোডাক্ট সম্পর্কে বিস্তারিত লিখবেন, কেন এই প্রোডাক্টটিউ কেনা উচিত, অন্যদের চেয়ে কিভাবে এই প্রোডাক্টটি কিনলে বেশি লাভবান হওয়া যাবে ইত্যাদি লিখে আপনি সেটার মার্কেটিং করবেন।
এবং আপনার সেই পোস্টে এমাজনের এফিলিয়েট লিংকটি শেয়ার করে দিবেন। যদি কেউ আপনার লিখা আর্টিকেল পড়ে লিংকে ক্লিক করে সেই প্রোডাক্ট ক্রয় করে তাহলে সেখান থেকে আপনি কমিশন পাবেন।
১৩. অনলাইন সার্ভে করে ইনকাম
অবসর সময়ে আপনি অনলাইনে কিছু সার্ভে বা জরিপে অংশ নিয়েও অনলাইন থেকে সহজে আয় করতে পারেন। অনেক জরিপ সংস্থা আছে যারা আপনাকে কতগুলো প্রশ্নের উত্তর দিতে বলবে, আপনার নিজের চিন্তাধারা এবং আপনি এই মুহুর্তে ওদের জরিপ করা টপিক নিয়ে কি ভাবছেন সেটা জানিয়ে অনলাইন সার্ভে করে ইনকাম করতে পারেন।
www.swagbucks.com এবং www.surveyjunkey.com এই ওয়েবসাইট গুলোর দ্বারা আপনি বিভিন্ন সার্ভেতে অংশগ্রহন করতে পারেন।
তবে, সবাই অনলাইন সার্ভে করতে পারে না। এর কিছু কারণ দেখে নিন:
কিছু সমীক্ষা শুধুমাত্র নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর লোকেদের লক্ষ্য করে, যেমন একটি নির্দিষ্ট লিঙ্গ, বয়স বা পেশার মানুষ।
এছাড়া সার্ভে করে আপনি খুব বেশি আয়ও করতে পারবেন না কারন, সার্ভে করার জন্য আপনার কোনো স্কিল প্রয়োজন হচ্ছেনা।
তাছাড়া এটি সময় সাপেক্ষ।
ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, গ্রাফিক্স ডিজাইন কিংবা কন্টেন্ট রাইটিং এর মতো স্কিলকে আপনি পার্মানেন্ট ভাবে নিতে পারবেন। কিন্ত সার্ভে করাটাকে কখনোই স্থায়ী কোনো প্রফেশন হিসেবে নিতে পারবেন না। এটির কোনো ভবিষ্যত নেই। হয়তো তাৎক্ষণিক কিছু অর্থ পাবেন,এতটুকুই!
কিছু অনলাইন সার্ভে ইনকাম সাইট-
- www.swagbucks.com
- www.surveyjunkie.com
- www.harrispollonline.com
১৪. অনলাইনে আয় করার আরেকটি উপায় ফটোগ্রাফি
ফটোগ্রাফি হতে পারে অনলাইনে আয় করার সহজ আরেকটি উপায়
এখনকার দিনে আমাদের প্রায় সবার হাতেই স্মার্টফোন আছে। মোবাইল কোম্পানিগুলো প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার জন্য তাদের ফোনের ক্যমেরাগুলোতে প্রায় যুগান্তকারী পরিবর্তন এনেছে।
এখনকার প্রায় সব মোবাইলফোনেই ডি এস এল আর ক্যমেরা লেভেলের ছবি তোলা যায়।
কোনটা মোবাইলে তোলা, আর কোনটা DSLR এর তোলা পার্থক্য করা যায়না। সবার পকেটেই যেহেতু মোবাইল-ক্যমেরা তাই আমরা শখের বসেও অনেক ছবি তুলে ফেলি।
ফেইসবুকেও ইদানীং ফটোগ্রাফি রিলেটেড গ্রুপ ব্যাপকভাবে বেড়ে যাচ্ছে। অসাধারণ সব ছবি তারা ক্লিক করছেন মোবাইলের ক্যমেরা দিয়ে।
ছবি তুলে ইনকাম
অনলাইনে কিছু সাইট আছে যেখানে আপনি নিজের তোলা সেসব ছবিগুলো বিক্রি করে আয় করতে পারেন। যেমনঃ
- www.adobestock.com
- www.shutterstock.com
- www.foop.con
- www.alamy.com
- www.IstockphoGettyimages.com
- www.gettyimages.com
শেষ কথা
আমাদের আজকের আর্টিকেলে আমরা সহজে অনলাইনে অর্থ উপার্জনের বিভিন্ন উপায় সম্পর্কে আলোচনা করার চেস্টা করেছি । অনলাইনে টাকা ইনকাম করার সহজ উপায় আছে অনেক। কোনটা আপনার জন্য ভালো হবে, সেটা ভাবুন।আপনি যদি ব্যবসায়ায়িক চিন্তাধারার মানুষ হোন তবে অনলাইন বিজনেস/স্টোরের কথা চিন্তা করুন ।
স্কিল ডেভেলপ করে কোনো অনলাইন পেশার সাথে যুক্ত থাকতে চাইলে ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, গ্রাফিক ডিজাইন, কন্টেন্ট রাইটিং, এবং এসইও নিয়ে কাজ করতে পারেন।
লেখালেখি ভালো পারলে ব্লগিং করতে পারেন।
কোনো বিষয়ে একাডেমিক জ্ঞান ভালো থাকলে অনলাইনে পড়াতে পারেন।
নিজেকে সময় দিন। আপনি যেটা পারবেন বলে মনে হচ্ছে, সেদিকেই আগান।
সতর্কতা
অনলাইনে অর্থ উপার্জনের অনেক উপায় আছে এটা ঠিক।
তবে এখানে অনেক স্ক্যম ওয়েবসাইটও আছে। বিশেষ করে সার্ভে সাইটগুলোতে। তাই কোনো ওয়েবসাইটে কাজ করার আগে সেটি কতটুকু লেজিট সেটা সম্পর্কে জেনে নিবেন।
আরও পড়ুন-
- নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট নিয়োগ
- সমাজসেবা অধিদপ্তর নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি
- কম্পিউটার কাউন্সিল নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি
- আনসার ভিডিপি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ২০২২
সকল চাকরির খবর দেখুন- এখানে